বলা হয় প্রাচীনকালের মসলিন কাপড়ের উত্তরাধিকারী হিসেবে জামদানি শাড়ি । যা বাংলাদেশের অনন্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য । ‘জামদানি’ কে স্রেফ কাপড়/শাড়ি বা পণ্য ভাবলে ভুল হবে। ‘জামদানি’ হচ্ছে বিশেষ ভূগোল ও পরিবেশে শিল্প চর্চার বিশেষ একটি ধরণ যার মাধ্যমে তাঁতি সুতা , রং , মাকু এবং তাঁত এর মাধ্যমে নৈপুণ্য শিল্প তৈরী করে । জামদানি বুনন এর কৌশল ও প্রক্রিয়া -য় থাকে অনেকগুলো ধাপ । এবং প্রতিটা ধাপে সবার যত্নেই তৈরি হয় একটি শিল্প ।
জামদানি বুনন এর কৌশল ও প্রক্রিয়া -র ধাপগুলো হল :
ধাপ ১
জামদানি শাড়ির জন্য যে রেশম ও সুতি সুতা দরকার হয় তা প্রথমে কোরা বা সাদা রং এ থাকে । প্রয়োজন অনুযায়ী তা রঙ করা হয় ।
ধাপ ২
রঙ করা সুতাকে প্রথমে ধোয়া হয় । তারপর মাড় দিয়ে নাটাইয়ে পেঁচিয়ে কড়া রোদে শুকিয়ে জামদানি বোনার উপযোগী করা হয় । সুতাকে বিভিন্ন ধাপে মাড় দিয়ে শক্ত করা হয় ।
ধাপ ৩
নকশা তোলার জন্য যে সুতা ব্যবহার হবে তা ছোট গুটিতে পেঁচানো হয় । ভরনার সুতা মৈারা গুটি এবং টানার সুতা তার থেকে বড় গুটি ( নলি ) তে পেঁচানো হয় ।
ধাপ ৪
জামদানি বুননেন ক্ষেত্রে দক্ষ ভুমিকা পালন করে হাওজাইন্না । সুতা টানা দেয়া যাদের মুল কাজ । এরা সমান তালে হেটে হেটে জোড়া খুটিতে সুতা টানা দেয়। টানা সুতা ৪০ থেকে ৫০টি ববিনে পেঁচানো থাকে । তারা শানা , টানা ইত্যাদি তৈরী করে থাকে । এক টানায় পাঁচ বা ততোধিক শাড়ি বানানো যায় ।

ধাপ ৫
তাঁত এর ফ্রেমে বসানোর জন্য টানা, শানা এবং ভিম তৈরি হলে জামদানি বুননের জন্য প্রস্তুত হয় ।
ধাপ ৬
জামদানি বুননে একই সাথে দুজন তাঁতি কাজ করেন। যিনি মুল ব্যাক্তি তাকে ওস্তাদ বলে সম্বোধন করা হয় এবং মূল তাঁতির সাথে যে থাকেন তাকে সাগরেদ বলে থাকেন । ডানে বসেন ওস্তাদ এবং বাম দিকে বসে সাগরেদ । সে ওস্তাদের নির্দেশ পালন করে থাকে । ওস্তাদ ভরনার সুতা মাকুর সাহায্যে সাগরেদ এর দিকে চালান দেয় এরপর ‘দোপ্তি ’ টেনে কান্ডুর দয়ে নিখুঁত ভাবে ঘুরিয়ে জামদানির মুল নকশা তোলা হয় ।
ধাপ ৭
জামদানি কিছু অংশ তৈরী করা হলে নকশা করার সময় আরো একবার মাড় দেয়া হয় ।
তথ্যসূত্র
prothomalo.com/ঢাকাই-জামদানির-রঙিন-ভুবন
bbc.com/bengali
bn.wikipedia.org
চিত্রসূত্র : bn.wikipedia.org এবং ইন্টারনেট
গ্রাফিক্স : ফায়জী হাসান