sculptor Shamim Sikder

Bangladeshi sculptor

ভাস্কর শামীম সিকদার | SHAMIM SIKDER

তাঁর গড়া ভাস্কর্য টিএসসি এলাকায় ‘স্বোপার্জিত স্বাধীনতা, এসএম হলের পাশে ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’ ভাস্কর্য

ভাস্কর শামীম সিকদার এর জন্ম ১৯৫৩ সালের ২২ অক্টোবর, ফরিদপুর। বাবা ছিলেন কৃষি অফিসার। বিভিন্ন জায়গায় বদলি হবার কারনে শামীম সিকদারে বেড়ে ওঠা এবং পড়াশুনা বরিশাল, উজিরপুর এবং নরসিংদি তে এসে মেট্রিক পাশ করেন। যদিও পড়াশুনা তার কোন সময়ই ভালো লাগতো না।

বুলবুল ললিতকলা একাডেমি (বাফা) থেকে ভাস্কর্যের ওপর তিন বছরের কোর্স সম্পন্ন করেন ১৯৬৭ সালে। এই কোর্সটির শিক্ষক ছিলেন মিস্টার সিভিস্কি যিনি একজন বিখ্যাত ফ্রেঞ্চ ভাস্কর। বাংলাদেশ কলেজ অব আর্ট এন্ড ক্র্যাফটস (বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদ) থেকে স্নাতক ১৯৭৪ সালে। লন্ডনের ‘স্যার জন স্কুল অফ আর্ট’ থেকে এক বছরের সার্টিফিকেট কোর্স সম্পন্ন করেন ১৯৭৫ সালে। ১৯৭৬ সালে দেশে ফিরে ফ্রিল্যান্স ভাস্কর হিসেবে কাজ শুরু করেন।

ভাস্কর শামীম সিকদার

কর্মজীবন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ১৯৮০ সালে। ১৯৮৬ সালে সহকারী অধ্যাপকের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৯৩ সালে সহযোগী অধ্যাপক, ১৯৯৯ সালে অধ্যাপক হন ।  ১৯৯০ সালে চীনে মিস্টার লি ডুলি নামের একজন বিখ্যাত ভাস্করের সাথে কাজ করেন এক বছরের মতো

চিত্রশালা

তিনি সিমেন্ট, ব্রোঞ্জ, কাঠ, প্লাস্টার অব প্যারিস, কাদা, কাগজ, স্টীল ও গ্লাস ফাইবার মাধ্যমে কাজ করতেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করেন। তাঁর গড়া ভাস্কর্য টিএসসি এলাকায় ‘স্বোপার্জিত স্বাধীনতা, এসএম হলের পাশে ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’ ভাস্কর্য বলয় অনন্য কাজ। বিশেষ করে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা এই দেশের ভাস্কর্যের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। একই ভাস্কর্যে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে তুলে আনা হয়েছে। এফডিসি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের রয়েছে তাঁর ভাস্কর্য।

 তিনি ইস্কাটনে জাতীয় ভাস্কর্য গ্যালারি নির্মাণ করেছেন।

তার গুরুত্বপূর্ণ কিছু কর্ম তালিকা :

  • ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতির জনকের ভাস্কর্য
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসিতে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ হলে স্বামী বিবেকানন্দ
  • স্ট্রাগলিং ফোর্স
  • চারুকলা ইনসস্টিটিউটে একটি মধুর স্বপ্ন
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুলার রোডে সলিমুল্লাহ হল, জগন্নাথ হল আর বুয়েট সংলগ্ন সড়ক দ্বীপে ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’

শামীম সিকদার এবং মুক্তিযুদ্ধ

প্রখ্যাত কমিউনিস্ট বিপ্লবী নেতা সিরাজ সিকদার তার আপন বড় ভাই। তার ভাই সিরাজ সিকদার ছাত্র ইউনিয়ন করত। সেই সূত্রে তিনিও ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ভাইদের সাথে মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নিতেন। বিভিন্ন পোস্টার করে দিতেন। চারুকলায় পড়াকালীন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। তখন স্বাধীনতার পক্ষে যা কিছু হতো সবকিছুতেই অংশগ্রহণ ছিলো সামনের সাড়ির। জুডো-কারাত , মারধরে ছিল তার বেশ পারদর্শিতা। তাই তো সবাই তখন ‘শামীম ভাই’ বলত। ঊনসত্তরের আন্দোলন, পরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। মওলানা ভাসানীর মিটিং কিংবা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ মঞ্চের পাশে দাঁড়িয়ে শুনেছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর সাথে ছিল ভালো সখ্যতা। এক সঙ্গে বসে আড্ডা মারতেন। বঙ্গবন্ধু তাকে মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী হিসেবে চিনতেন।

পুরস্কার ও সম্মানণা

  • ২০০০ সালে একুশে পদক লাভ করেন।
  • ১৯৬৯ সালে লাভ করেন ইনস্টিটিউট অব ফাইন আর্টস পুরস্কার ১৯৬৯ সাল, ১৯৭০ সাল, ১৯৭৩ সাল এবং ১৯৭৪ সালে।
  • ১৯৭৩ সালে অর্জন করেন সিলভার জুবলি অ্যাডওয়ার্ড অব ফাইন আর্ট।
  • ১৯৭৪ সালে ভাস্কর্যের ওপর প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার জিতে নেন

ফটো জার্নালিস্ট মোহাম্মদ আসাদ এর ডায়েরি থেকে

১৯৯৯ সালের ৮ জুলাই শামীম সিকদারের সঙ্গে দেখা করি চারুকলায় তাঁর ডিপার্টমেন্টে। তাঁর ভাস্কর্য গড়ার গল্প শুনালেন, শুনালেন তাঁর বীরত্বের গল্প। সেদিন দুপুর ১টা ৩১ সেকেন্ডে তিনি তাঁর প্যাডে আমাকে এঁকে দিলেন ভয়ানক কিছু মুখ। তাঁর ছবিটি সেই দিনেই তোলা।

শামীম সিকদার
শিল্পী- শামীম সিকদার | সংগ্রাহক : মোহাম্মদ আসাদ

ভাস্কর শামীম সিকদার

আলোকচিত্রটি ১৯৯৯ সালে তোলা

আলোকচিত্রী : মোহাম্মদ আসাদ

স্বাধীনতা সংগ্রাম’ ভাস্কর্য বলয়ে প্রবেশ ধারে বঙ্গবন্ধুর একটি ভাস্কর্য গড়েন ২০১৩ সালে।

আলোকচিত্রী : মোহাম্মদ আসাদ

শ্রদ্ধাঞ্জলি

ভাস্কর শামীম সিকদার

facebook থেকে নেয়া :

মন্তব্য করেন | 

Mahmuda Begum

শামীম আপা, আমাদের অনেক সিনিয়র, সৌভাগ্য না দুর্ভাগ্য বলবো জানিনা….১৯৭৪ সালের অক্টোবর/নভেম্বর হবে হোস্টেলে থাকার সিট পাই তাও আবার শামীম আপার রুমমেট (আমার প্রথম রুমমেট) হিসাবে। প্রথম প্রথম মোটামুটি ভালোই লাগছিলো কিন্তু আস্তে আস্তে সব কিছু অন্য রকম হতে শুরু করলো অর্থাৎ তার মানসিকতার সাথে আমার মানসিকতা একেবারেই মিলছিলো না…. সে অনেক কথা, আরেকদিন বলা যাবে………..

Taeb Millat Hossain

বাংলাদেশে ভাস্কর্য-চর্চায় অন্যতম ব্যক্তিত্ব।


তথ্যসূত্র :

www.bd-pratidin.com

উইকিপিডিয়া


আরও পড়ুন

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

আপনার একটি শেয়ার আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা

X (Twitter)
Post on X
Pinterest
fb-share-icon
Instagram
FbMessenger
Open chat
1
Scan the code
Hello
How can i help you?
Skip to content