বাংলার চিরায়ত সভ্যতা, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং বৈচিত্র্যময় ঐতিহ্যকে সংগ্রহ ও সংরক্ষণের প্রত্যয়ে যাত্রা শুরু করেছে
“বাংলাদেশ ফ্যাশন আর্কাইভ।”
এই উদ্যোগে স্থান পাবে বাংলাদেশের সমসাময়িক ফ্যাশন জগতের নানা খবরাখবর, যা সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাওয়া স্মৃতিগুলোকে জীবন্ত রাখবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটি হবে একটি মূল্যবান দলিল—বাংলাদেশের ফ্যাশনের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের এক মেলবন্ধন।আর্কাইভটি শুধু ফ্যাশন নয়, বরং আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবে, যা যুগে যুগে প্রেরণা যোগাবে।
Click Down for The Main Menu
.
ঢাকা, যাকে বর্তমানে “বিশ্বের রিকশা রাজধানী” বলা হয়, এই শহরের রয়েছে এক গভীর ইতিহাস এবং সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে এটি জাহাঙ্গীর নগর নামে পরিচিত ছিল। সেই সময় ঢাকার মসলিন কাপড় ছিল বিশ্ববিখ্যাত, যা সূক্ষ্মতা ও মসৃণতায় অনন্য। ঢাকায় উৎপাদিত মসলিনের জন্য এখানকার বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে খ্যাতি লাভ করে, এবং বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা মসলিনসহ নানা পণ্য ক্রয়ের উদ্দেশ্যে এখানে আসতেন।
ঢাকা বিভাগের প্রতিটি কোণে খুঁজে পাওয়া যাবে নিজস্ব শৈল্পিক পরিচয়, যা কেবল কারুশিল্পের সৌন্দর্যই নয় বরং এ অঞ্চলের জীবনধারা এবং ঐতিহ্যকেও ফুটিয়ে তোলে। হাতের তৈরি কাপড়, মাটির তৈরি সামগ্রী, কাঠের কাজ, ধাতব কাজ সহ নানা রকমের শিল্পের জন্য ঢাকার প্রতিটি জেলা আলাদা পরিচয়ে সমৃদ্ধ। এই ঐতিহ্য ও কারুশিল্প বাংলাদেশের জাতীয় সংস্কৃতির একটি বড় অংশ হয়ে আছে, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে চলেছে।
এই হস্ত ও কারুশিল্প মানচিত্র ঢাকা বিভাগ -এর মাধ্যমে উপলদ্ধি করা যাবে ঢাকা বিভাগের প্রতিটি জেলার প্রতিটি কোণ কতটা বৈচিত্র্যময় এবং ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ ।
বয়কট’ শব্দটা শুনলে আমাদের মাথায় যে বিষয়গুলো ঘুরপাক খায় তেমনই শব্দযুক্ত হলো- ‘ক্যানসেল কালচার’ বা কল-আউট কালচার।
‘ক্যানসেল কালচার’ বা কল-আউট কালচার মূলত এমন একটা টার্ম যা দিয়ে অনলাইনে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা সামনাসামনি কাউকে তার সামাজিক বা পেশাদার গণ্ডি থেকে বের করে দেওয়া হয়। বা জনগণের আদালতে তাকে পরোক্ষভাবে শাস্তি পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। এই বাতিল বা ক্যানসেল বা বয়কটরে ডাক যে শুধু কোনো ব্যক্তিকে ঘিরে হয় তা নয়। আপত্তিকর বলে বিবেচিত হলে কোনো কোম্পানি, সংগঠন, সাহিত্য-সংস্কৃতির বিভিন্ন দিককে বয়কটের আওতায় ফেলা হয়। এমনকি দেশের সরকার প্রধান কেও। যা বাংলাদেশের জনগন দেখলো ২০২৪ সালে। ফিরো পেলো স্বাধীন বাংলাদেশ ২.০।
এছাড়া জরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জরাইলি পন্য বয়কট আন্দোলন, ভারতের পণ্য বয়কটের ডাক কিংবা এলজিবিটিকিউ ইস্যু নিয়ে দেশীয় ফ্যাশন ব্রান্ড আড়ং কে বয়কটের ডাকই হলো পশ্চিমা বিশ্বের বহুল প্রচলিত একটি মুভমেন্ট ‘ক্যানসেল কালচার’।
অনেকে মনে করেন, যখন অন্য কিছু আর কাজ করে না তখন জনসমক্ষে জবাবদিহির এবং বয়কট করার এই প্রক্রিয়াটি সামাজিক ন্যায়বিচারের একটি হাতিয়ার যা জনগনের আদালত বলা যায়। সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে লড়াইয়ের একটি উপায় হয়ে উঠছে এই ক্যানসেল কালচার।
আমাদের ‘আবহমান বাংলার প্রতিচ্ছবি’ অ্যালবামটি কেবল ছবি নয়, এটি বাংলার প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক বিস্তৃত ক্যানভাস। এই ক্যানভাসকে আরও সমৃদ্ধ করতে আমরা আপনাকে আহ্বান জানাচ্ছি—আপনার তোলা ছবি দিয়ে এই অ্যালবামটি পূর্ণ করতে।
আপনার চোখে দেখা বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্যবাহী উৎসব, লোকজ জীবন কিংবা নিত্যদিনের সরল গ্রামীণ দৃশ্যাবলীর ছবি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করুন। আপনার ছবি এই অ্যালবামের অংশ হয়ে বাংলার অনন্য রূপ, বৈচিত্র্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে সাহায্য করবে।
আপনার একটি শেয়ার এবং মন্তব্য আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা ❤️
কালের আবর্তে প্রতিনিয়তই পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগছে হালের দেশীয় ফ্যাশনে। প্রাচ্যের সংস্কৃতি থেকে অনুপ্রাণিত হলেও আবহমান বাংলার চিরাচরিত সংস্কৃতিই প্রাধান্য পেয়েছে দেশীয় ফ্যাশনের প্রধান উপাদান হিসেবে। এই আবহমান বাংলার সভ্যতা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংগ্রহ করে, তা সংকলণ ও সংরক্ষণের প্রত্যয় নিয়ে যাত্রা “ বাংলাদেশ ফ্যাশন আর্কাইভ ” এর। এতে সংরক্ষিত থাকবে বাংলাদেশের সমসাময়িক ফ্যাশন জগতের খবরাখবর যা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য দলিল হিসেবে কাজ করবে।
অন্যের সংস্কৃতি চর্চায় আমরা হারাতে বসেছি আমাদের মৌলিকত্ব। আমরা শেকড় থেকে বিচ্যুতির পথে। এখনই সময় , ঐতিহ্য হারিয়ে যাওয়ার আগেই আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে আমাদের নিজস্বতা। আমাদের সমৃদ্ধময় ঐতিহ্যবাহী শিল্প, লোকজ খেলা, লোকসাহিত্য পরিচয় করিয়ে দিতে হবে পরবর্তী প্রজন্মর সাথে। এগিয়ে আসতে হবে নিজ দায়িদ্ববোধ থেকে। তবেই সমৃদ্ধ হবে আমাদের ঐতিহ্য ।