Rajshahi
division
.
রাজশাহী, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী নগরী, যা তার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতির জন্য সুপরিচিত। পঞ্চদশ শতকে ভাতুরিয়া দিনাজপুরের জমিদার রাজা কংস বা গনেশ এই অঞ্চলের অধিপতি ছিলেন, যিনি রাজা শাহ নামে পরিচিতি লাভ করেন। ধারণা করা হয়, ‘রাজা’ এবং ‘শাহ’ শব্দদ্বয়ের সমন্বয়ে রাজশাহীর নামকরণ হয়েছে। এটি আজ একাধিক পরিচয়ে সমৃদ্ধ—রেশম নগরী, শিক্ষা নগরী, আমের রাজধানী, শান্তির শহর এবং সবুজ নগরী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে। তবে শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বা শিক্ষার জন্যই নয়, রাজশাহী বিভাগের প্রতিটি জেলাই তাদের নিজস্ব হস্ত ও কারুশিল্পের ঐতিহ্যের মাধ্যমে অনন্য পরিচিতি বহন করে।
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পের ধারাবাহিকতায় রাজশাহীর অবদান অত্যন্ত গৌরবজনক। শখের হাঁড়ি, বাংলার পটচিত্র এবং পটের গানের মতো শিল্পকলায় রাজশাহী অঞ্চলের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়। পাবনার তাঁতশিল্প, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুজনি কাঁথা, এবং কাঁসা-পিতল শিল্প এই বিভাগের ঐতিহ্যকে করেছে আরো সমৃদ্ধ ও বহুমাত্রিক। প্রতিটি হস্তশিল্প কেবল স্থানীয় জনগোষ্ঠীর দক্ষতার পরিচায়ক নয়, বরং এগুলো দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবেও বিবেচিত হয়।
এই নিবন্ধে রাজশাহী বিভাগের হস্ত ও কারুশিল্প মানচিত্র -এর মাধ্যমে রাজশাহীর
ইতিহাস, বৈচিত্র্য এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক গুরুত্ব তুলে ধরা হবে। রাজশাহীর বিভিন্ন অঞ্চলের হস্তশিল্পের প্রভাব ও মূল্যায়ন যেমন হবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু, তেমনি স্থানীয় কারুশিল্পীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সৃষ্টিশীলতাকেও যথাযথভাবে তুলে ধরা হবে।
রাজশাহী বিভাগের
জেলা সমূহ
–
রাজশাহী বিভাগে বর্তমানে মোট ৮ টি জেলা রয়েছে। এই জেলাগুলোর প্রতিটির রয়েছে নিজস্ব ঐতিহ্য এবং সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য, যা রাজশাহী বিভাগের সামগ্রিক বৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করে। জেলাগুলো হলো:
বগুড়া জেলা
পাবনা জেলা
রাজশাহী জেলা
জয়পুরহাট জেলা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা
নওগাঁ জেলা
নাটোর জেলা
সিরাজগঞ্জ জেলা
রাজশাহী বিভাগের
উল্লেখযোগ্য হস্ত ও কারুশিল্প
–
ছন ও তালপাতার ঝুড়ি
নকশি শিকা
লুঙ্গির ও গামছা
বাঁশ ও বেত শিল্প
পাবনার শাড়ি
নকশি কাঁথা
কাঁসা-পিতল শিল্প
তালের পাখা
শখের হাঁড়ির
বাংলার পট ও পটের গান
রাজশাহী বিভাগের
ঐতিহ্যময় হস্ত ও কারুশিল্প মানচিত্র
–
রাজশাহী বিভাগের প্রতিটি জেলার ঐতিহ্যময় হস্ত ও কারুশিল্পকে মানচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই প্রচেষ্টার মূল লক্ষ্য হলো রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পের বৈচিত্র্য ও অনন্যতা সবার সামনে তুলে ধরা। মানচিত্রটি তৈরি করতে এবং সঠিক তথ্য নিশ্চিত করতে সবার সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ত্রুটি বা অসম্পূর্ণতা থাকলে তা সঠিকভাবে সংশোধনের জন্য আপনাদের মূল্যবান মতামত ও সহযোগিতা কাম্য। মানচিত্রটি আরও সমৃদ্ধ করতে যেকোনো নতুন তথ্য, সংশোধনী বা সংযোজন যুক্ত করা যেতে পারে।
আপনারা যে কোনো ধরনের পরামর্শ, সংশোধনী বা তথ্য প্রদান করলে এই মানচিত্রটি আরও নির্ভুল ও তথ্যবহুল হয়ে উঠবে। এতে কেবলমাত্র মানচিত্রটির পূর্ণতা নিশ্চিত হবে না, আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও আরও স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হবে। এই সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের হস্ত ও কারুশিল্পের গৌরবময় ইতিহাস এবং ঐতিহ্য আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
ঐতিহ্যময় হস্ত ও কারুশিল্প পূর্ণাঙ্গ মানচিত্র দেখতে ক্লিক করুন
রাজশাহী বিভাগের
হস্ত ও কারুশিল্পের
বিস্তারিত
.
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার শাহী বাঘা মসজিদ সম্পর্কে পড়ুন এই লিংকে –
Basket made of
chon and
palm leaves
ছন ও তালপাতার ঝুড়ি
আমরা এখন পরিবেশবান্ধব পণ্য এবং টেকসই জীবনধারার কথা বলছি। কিন্তু একটা সময়, বুঝে বা না বুঝে, আমরা প্রকৃতির খুব কাছাকাছি ছিলাম। সেসব দিনগুলোতে আমাদের জীবনযাত্রার প্রতিটি ধাপে পরিবেশের সাথে একাত্ম থাকার ছাপ দেখা যেত। ছন ও তালপাতার ঝুড়ি সেই সময়ের এক অনন্য উদাহরণ।
হাপুনিয়া, বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়নের ছোট্ট কিন্তু প্রাণবন্ত গ্রাম। এখানে ছন ও তালপাতার ঝুড়ি তৈরির ঐতিহ্য আজও টিকে আছে। কিন্তু এর পেছনে লুকিয়ে আছে কঠোর পরিশ্রম, শিল্পের প্রতি ভালোবাসা এবং প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের নিবিড় সম্পর্কের গল্প।
Nakshi Shika
নকশি শিকা
রান্নাঘরের আড়া থেকে ঝুলিয়ে রাখা হতো এই শিকা, যাতে খাবারদাবার আর সংসারের ছোটখাটো জিনিস সযত্নে সংরক্ষণ করা যেত। তবে শিকার বিশেষত্ব শুধু এর কার্যকারিতা নয়, বরং এর অলংকরণ, কারুকার্য আর বহুমাত্রিকতার মধ্যেই আমাদের কাছে পরিচত হয় নকশি শিকা নামে। এটি আমাদের গ্রামীণ নারীদের সৃজনশীলতা এবং কারুশিল্পের প্রতি ভালোবাসার এক প্রতীক।
রাজশাহী, পাটের প্রধান উৎপাদনকেন্দ্র হিসেবে রাজশাহী অঞ্চলের কারিগররা নকশি শিকার ক্ষেত্রে বিখ্যাত। এখানকার শিকার নকশার সূক্ষ্মতা এবং ঐতিহ্যের ধারক। এছাড়া নাটোর, টাঙ্গাইল, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়া, যশোর অঞ্চলের কারিগররা দৃষ্টিনন্দন নকশি শিকা তৈরি করে।
Lungi Tales
বাঙালির চিরায়ত পোশাক লুঙ্গি: কাল থেকে কালান্তর
দেশ ভাগের পর পূর্ববাংলায় হিন্দুদের থেকে মুসলমানরা যে আলাদা তা প্রমান করতে কাকাকে চাচা, জলকে পানি বলা কিংবা হাত জোড় করে নমস্কার পরিহার করার মতই ধুতির জায়গা দখল করে নেয় লুঙ্গি। বলা যায় বাংলায় লুঙ্গি -্এ প্রচলন মুসলমানদের হাত ধরেই। দেশভাগের পর, পাকিস্তানের সঙ্গে পূর্ববাংলা যুক্ত হওয়ার সময়ে মুসলিম পরিচয় রক্ষার জন্য মানুষ অনেক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন গ্রহণ করে। এই সময়েই হিন্দুদের পরিহিত ধুতির বিকল্প হিসেবে মুসলমানরা লুঙ্গিকে নিজেদের পোশাক হিসেবে গ্রহণ করে।
পিতৃ পুরুষের হাতে লালিত এবং উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত তাঁত শিল্পে পাবনা জেলা ও সিরাজগঞ্জ জেলা সুনাম অর্জন করেছে। সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলায় একটি গ্রাম “তামাই”।
তামাই গ্রামকে বাংলাদেশের লুঙ্গিশিল্পের আঁতুড়ঘর বলা হয় ।
পাবনার চাঁচকিয়া, চন্ডীপাশা, গোপালপুর, ষাইটগাছা, বপুর, কদিমবগদি গ্রামেও লুঙ্গি তৈরি হয়।
PABNA SAREE
পাবনার শাড়ি: ঐতিহ্যের সুর, বুননের গল্প
পাবনার মাটির গন্ধ কি কোনো দিন পেয়েছেন? এমন মাটি, যা একসঙ্গে গল্প বলে আর বুননের সুর তোলে। পাবনার শাড়ি ঠিক তেমনই—গল্প আর সুরের এক মায়াবী মিশেল। এই শাড়ি শুধু একটি পোশাক নয়, এটি একটি ঐতিহ্যের ধারক, প্রজন্মের গল্পের বাহক।
পাবনাই শাড়ি শুধু একটি পোশাক নয়; এটি একজন নারীর ব্যক্তিত্ব, তার শৈল্পিক মনোভাব এবং ঐতিহ্যের প্রতি গভীর টান প্রকাশ করে।
তাঁতশিল্পে সমৃদ্ধিশালী পাবনা জেলা। পাবনার অন্যতম তাঁত প্রধান এলাকা হচ্ছে দোগাছী, সুজানগর, বেড়া, সাঁথিয়া এবং আটঘরিয়া।
পাবনা অঞ্চলের শাড়ি বোনার ঐতিহ্য এখনও বহমান থাকলেও উন্নত মানের শাড়ি এখন কেবল সিরাজগঞ্জেই বোনা হয়ে থাকে।
Saree of Bangladesh | The Bearer of Tradition
বাংলাদেশি সেরা দশ শাড়ি
দেশিয় সংস্কৃতির এক অনন্য অনুষঙ্গ হলো শাড়ি। যা বাংলাদেশের ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক । একেকটি শাড়ি যেন একেকটি ভালোবাসার গল্প ।
আপনার একটি শেয়ারে জানবে বিশ্ব, আমাদের দেশ কতটা সমৃদ্ধ
BAMBOO CRAFT
ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্প
অঙ্কে তৈলাক্ত বাঁশের ধাঁধা নয়,
জীবন অঙ্কের ধাঁধায় বাধা পড়ে আছে শিল্পীদের জীবনযাত্রা। আর বিভিন্ন সংকটে ধীরে ধীরে চাপা পড়ছে এ শিল্পের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারা। যেমন যান্ত্রিক যুগে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের অনুভূতি, তেমনি আমাদের শিল্প ও শিল্পকর্ম। দিন যতই যাচ্ছে সময়ের সাথে সাথে এ পুরনো ঐতিহ্য গুলো আজ বিলুপ্তির পথে। এমনি এক শিল্প, ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্প। যা আমাদের জনজীবন থেকে দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে।
যে কয়েকটি প্রাকৃতিক উপাদান লোকজীবনের সঙ্গে মিশে আছে, বাঁশ-বেত তাদের অন্যতম। বেত একজাতীয় লতানো বা সোজা বেয়ে ওঠা পাম। বাংলাদেশেও অনেক এলাকায় এটি রতন নামেও পরিচিত। তেমনই বাঁশ শিল্প বাংলাদেশের আরেকটি লোকশিল্প, বাংলাদেশের নিজস্ব শিল্প-সংস্কৃতির প্রতীক।
সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোর জেলার চলনবিল এলাকা বাঁশ ও বেতশিল্পের জন্য সুপরিচিত।
Nakshi kantha
নকশি কাঁথা: বাংলাদেশের লোকশিল্পের একটা অংশ
নকশি কাঁথা হলো সাধারণ কাঁথার উপর নানা ধরণের নকশা করে বানানো বিশেষ প্রকারের কাঁথা। নকশি কাঁথা বাংলাদেশের লোকশিল্পের একটা অংশ।
নকশি কাঁথার প্রতিটি সেলাই, প্রতিটি নকশা শুধু বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গল্পই বলে না, বরং টেকসই ও পরিবেশবান্ধব একটি জীবনধারারও প্রকাশ। এই শিল্পের সাথে গ্রামীণ নারীরা যে সংযোগ গড়ে তুলেছেন, তা প্রকৃতপক্ষে আধুনিক সাসটেইনেবল ফ্যাশন আন্দোলনের সাথে আমাদের দেশের শতবর্ষের পুরনো ঐতিহ্যের মেলবন্ধন তৈরি করেছে।
তেমনই রাজশাহীতে এক ধরনের কাঁথা যা লহরী কাঁথা নামে পরিচিত। পারস্য শব্দ লহর থেকে লহরী কাঁথা নামের উদ্ভব। লহর মানে হলো ঢেউ। রাজশাহী এই কাঁথা জন্য বিখ্যাত।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক ঐতিহ্য সুজনি কাঁথা । সাধারণত এই কাঁথায় ঢেউ খেলানো ফুল ও লতাপাতার নকশা থাকে।
Shokher hari
শখের হাঁড়ি – রাজশাহীর এক নিরবচ্ছিন্ন ঐতিহ্য
শুনলেই মনে হয়, এটি যেন কোনো শখের বস্তু। আসলেই তাই। শৌখিন কাজে ব্যবহৃত হয় বলেই এর এমন নাম। এটি ব্যবহারিক জিনিস হলেও, এর সৌন্দর্য ও শৈল্পিকতার কারণে এর নামেই জড়িয়ে আছে মুগ্ধতা।
জয়নুল মেলা কিংবা ঢাকা মার্কাস—দুই মেজাজের দুই ইভেন্ট। তবু দু’জায়গাতেই খুঁজে পাওয়া যায় শেকড়ের গল্প। মাটির সেই ঘ্রাণ, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের সেতু হয়ে কাজ করে। কখনো জয়নুল মেলা বা ঢাকা মার্কাসের মার্কেটপ্লেসে গিয়ে কি রঙিন সিকায় সাজানো রঙিন হাঁড়িগুলো দেখেছেন? সেগুলো আপনাকে কাছে টানবে, ছুঁড়ে দেবে প্রশ্ন—এই হাঁড়িগুলো শুধু পাত্র নয়, বরং একেকটি গল্প বলছে। বলছি রাজশাহীর শখের হাঁড়ির কথা। এটি শুধু মাটি আর রঙের খেলা নয়; এটি বাংলার সংস্কৃতির এক অপূর্ব অভিব্যক্তি।
sCROLL PAINTING
পটচিত্র এবং পটের গান বাংলার গৌরবময় ঐতিহ্যের ধারক
পটের গান বা পটুয়া সঙ্গীত সাধারণত এমন এক লোকগীতি যার মাধ্যমে পটের ছবি দেখে সুরেলা কণ্ঠে গল্প বা কাহিনী শোনানো হতো। এ ধরনের সঙ্গীত পরিবেশন প্রক্রিয়াটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পটুয়া শিল্পীরা নিজেরাই করতেন। তারা পটে চিত্র অঙ্কন করতেন এবং পরে সেসব চিত্রের বর্ণনা দিয়ে গান তৈরি করতেন। পটুয়া সঙ্গীতের মাধ্যমে মানুষের মনে ছাপ ফেলার পাশাপাশি বিনোদনের একটি বড় উৎস হিসেবে কাজ করত।
পটুয়াদের মধ্যে বেশিরভাগই মুসলিম ধর্মাবলম্বী হলেও, সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মধ্যেও পটগানের প্রচলন দেখা যায়। প্রধানত, দুটি ধরণের পটচিত্র পাওয়া যায়: দীর্ঘ জড়ানো পট এবং ছোট চৌকা পট। দীর্ঘ জড়ানো পট, যেমন গাজীর পট, বিশাল আকারের হয় এবং এতে বিস্তারিত কাহিনী চিত্রিত হয়। অন্যদিকে, ছোট চৌকা পট আকারে ছোট এবং একক আয়তাকার হয়।
The Tale of
BRASS & COOPER
তামা কাসাঁ রঞ্জিত
যে সম্প্রদায় কাঁসার তৈরী তৈজসপত্র বা গৃহস্থালীর কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যসামগ্রী তৈরী করেন তারা কাঁসারু বলে পরিচিত। এই সম্প্রদায়ের লোকজনকে ঠাটারি নামেও ডাকা হয়। কাঁসা পিতলের দ্রবসামগ্রীতে বিভিন্ন কারুকার্য ও নঁকশায় লোকজ কাহিনী ফুটে ওঠে শিল্পীর পরম মমতায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের উপকণ্ঠে আজাইপুর, আরামবাগ, শব্জরবাটি ও রামকেষ্টপুর গ্রামের মানুষ এই শিল্পের সাথে জড়িত।
Talpatar Haat Pakha
তালপাখা: স্মৃতি, শিল্প, এবং জীবিকার মেলবন্ধন
“শীতের কাঁথা, বর্ষার ছাতা আর গরমের পাখা”—এই কথা শুনলেই বাঙালির জীবনের সহজাত ও চিরকালীন চিত্রটি সামনে ভেসে ওঠে। হাত পাখা, যা এককালে বাঙালির নিত্য সঙ্গী ছিল, তা কেবল দৈনন্দিন ব্যবহারের বস্তু নয়, বরং এক ঐতিহ্যের অংশ। গ্রিক ও রোমান সভ্যতার যুগ থেকে শুরু করে আজকের দিনে, এই হাত পাখার ব্যবহার ও বিবর্তনের ইতিহাস এক দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে।
নাটোর শহর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরের হাঁপানিয়া ফকিরপাড়া গ্রামে ঢুকলেই দেখা যায় এক অদ্ভুত কর্মচাঞ্চল্য। যেন গ্রামবাসী মিলে এক মহাযজ্ঞে মেতেছে। কেউ তালের পাতা কাটছেন, কেউ রোদে শুকোতে দিচ্ছেন। এ গ্রামে একশো পরিবারের জীবন চলে তালপাখার বাতাসেই। একসময় তালগাছ না থাকা সত্ত্বেও হাঁপানিয়া এখন “তালপাখার গ্রাম” নামে পরিচিত।























