ফ্যাশনে-স্বাধীনতা-স্বাধীনতায়-ফ্যাশন-Independence-Day-of-Bangladesh-x-bfa-x-fxyz

Featured image by Nitya Upahar

ফ্যাশনে স্বাধীনতা, স্বাধীনতায় ফ্যাশন

খেয়াল রাখতে হবে, কখনই কোন বিষয় যেন বাড়াবাড়ির পর্যায়ে না যায়। স্বাধীনতা দিবসের কোন অমর্যাদা যেন না হয়। অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ স্বাধীনতা রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সবার।

বিশেষ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই একটি দিন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ন হয়ে ওঠে। বাঙালির জন্য এমন একটি দিন ২৬ মার্চ, স্বাধীনতা দিবস। যে চেতনা আমরা হৃদয়ে ধারণ করছি। এর সঙ্গে দিবস ভিত্তিক পোশাকের ব্যাপারটা আমাদের সংস্কৃতিতে জড়িয়ে আছে অনেক আগে থেকে। যা স্বাধীতার প্রতি মমত্ববোধ পোশাকে মাধ্যমে প্রকাশ করে। ফ্যাশনে স্বাধীনতা প্রতিফলিত হয় দেশের প্রতি আমাদের ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা।

আমাদের দিবস ভিত্তিক ফ্যাশনে অন্যতম অনুষঙ্গ হলো রং। রঙের মাধ্যমে আমরা একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে বুঝিয়ে থাকি। এটাই আমাদের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে চলে আসা দীর্ঘদিনের ট্রেন্ড। এই যেমন একুশে ফেব্রুয়ারীতে সাদা-কালোর প্রাধান্যতা পায়, তেমন স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে লাল-সবুজ। বৈশাখে লাল-সাদার আধিক্য জানান দেয় নতুন দিনের ডামাডোল।

স্বাধীনতা দিবসে ফ্যাশন

ফ্যাশনে স্বাধীনতার মূল থিম হিসেবে প্রাধান্য পায় পতাকার গাড় সবুজ আর সূর্য লাল । লাল আর সবুজ শুধু দুটি রং নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে রক্তরাঙা স্বাধীনতার ইতিহাস।

ছাব্বিশে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতার রং বলতে লাল-সবুজকেই বোঝায়।  আর তাই স্বাধীনতার দিবস শ্রদ্ধার সাথে জাতীয় উৎসবে পরিনত হয়েছে। আর উৎসবের আমেজে যে বিষয়টি অনেকটাই জায়গা জুড়ে থাকে, তা হচ্ছে পোশাক।

ফ্যাশন হাউসগুলো লাল-সবুজের থিমে নিয়ে আসেন হরেক রকম বাহারি পোশাক-আশাক। তাতে থাকে সব বয়স ও মানুষের জন্যই বিশেষভাবে নকশা করা পোশাক। দিনদিন এতে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের মানচিত্র, পতাকা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান-কবিতা, মুক্তিযোদ্ধা মোটিফের নকশা ইত্যাদি অনেক কিছুই। তবে সবকিছুর মধ্যেই পতাকার রঙ তথা লাল-সবুজ থেকেছে অনেকটাই স্থির। ঠিক যেমন লাল-সবুজ মানেই বাংলাদেশ, তেমনি লাল-সবুজ মানেই স্বাধীনতার ফ্যাশনও। ফ্যাশন সচেতন লোকজনের প্রবণতা থাকে এই সময়টা এলেই বিভিন্নভাবে পোশাকের মাধ্যমে উপলক্ষগুলো উদযাপন করা এবং নিজেদের সন্তানকেও সেইভাবে প্রস্তুত করা। স্কুল-কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠান কিংবা স্বাধীনতা দিবসের সকালগুলোতে পুষ্পার্পণের সময়টাতে এই কথার সত্যতা বোঝা যায়। ছোট ছোট পায়ের দল হেঁটে চলেছে, গায়ে জড়ানো লাল সবুজ পাঞ্জাবি-কুর্তি-জামা, মাথায় আঁকা পতাকার ট্যাটু। খুব বেশি কিছু না বুঝলেও দেশটাকে তারা রঙ আর পোশাক দিয়েও অনেকটা আপন করতে চাইছে। বড়দের জন্য ফ্যাশন যেন হয়ে উঠেছে দেশপ্রেম প্রদর্শনের আরেকটি মাধ্যম।

তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, কখনই কোন বিষয় যেন বাড়াবাড়ির পর্যায়ে না যায়। স্বাধীনতা দিবসের কোন অমর্যাদা যেন না হয়। অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ স্বাধীনতা রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সবার।

স্বাধীনতা দিবসের পোশাক পাওয়া যাবে

স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কিত বিভিন্ন ডিজাইনের টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, শাড়ি, সালোয়ার কামিজ পাওয়া যায় শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোতে। বর্তমানে দেশীয় সব ফ্যাশন হাউজ গুলো চেষ্টা করে দিবস উপলক্ষে কালেশন নিয়ে আসতে।

দেশীয় ফ্যাশন হাউজ নিত্যউপহার এসব দিবসকে গুরুত্বের সাথে পালন করে আসছে সেই শুরু থেকেই। এক ধরনের সংগ্রামরে মত করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দেশীয় সংস্কৃতিকে। তাদের ফেসবুকের একটা পোষ্ট দিয়ে শেষ লেখাটা শেষ করছি।


আপনার একটি শেয়ার আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা


পোশাকে স্বাধীনতা

স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কিত টি-শার্ট

ফ্যাশন ব্রান্ড: নিত্যউপহার

কবি নির্মলেন্দু গুণ

স্বাধীনতা নিয়ে কবিতা

স্বাধীনতা,
উলঙ্গ কিশোর

জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উল্ঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছো পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবী হও।
তোমার পরমায়ু বৃদ্ধি পাক আমার অস্তিত্বে, স্বপ্নে,
প্রাত্যহিক বাহুর পেশীতে, জীবনের রাজপথে,
মিছিলে মিছিলে; তুমি বেঁচে থাকো, তুমি দীর্ঘজীবী হও।

তোমার হা-করা মুখে প্রতিদিন সূর্যোদয় থেকে
সূর্যাস্ত অবধি হরতাল ছিল একদিন,
ছিল ধর্মঘট, ছিলো কারখানার ধুলো।

তুমি বেঁচেছিলে মানুষের কলকোলাহলে,
জননীর নাভিমূলে ক্ষতচিহ্ন রেখে
যে তুমি উল্ঙ্গ শিশু রাজপথে বেরিয়ে এসেছো,
সে-ই তুমি আর কতদিন ‘স্বাধীনতা, স্বাধীনতা’ বলে
ঘুরবে উলঙ্গ হয়ে পথে পথে সম্রাটের মতো?
জননীর নাভিমূল থেকে ক্ষতচিহ্ন মুছে দিয়ে
উদ্ধত হাতের মুঠোয় নেচে ওঠা, বেঁচে থাকা
হে আমার দূঃখ, স্বাধীনতা, তুমিও পোশাক পরো;
ক্ষান্ত করো উলঙ্গ ভ্রমণ, নয়তো আমারো শরীরি থেকে
ছিঁড়ে ফেলো স্বাধীনতা নামের পতাকা।

বলো উলঙ্গতা স্বাধীনতা নয়,
বলো দূঃখ কোনো স্বাধীনতা নয়,
বলো ক্ষুধা কোন স্বাধীনতা নয়,
বলো ঘৃণা কোন স্বাধীনতা নয়।

জননীর নাভিমূল ছিন্ন-করা রক্তজ কিশোর তুমি
স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবী হও। তুমি বেঁচে থাকো
আমার অস্তিত্বে, স্বপ্নে, প্রেমে, বল পেন্সিলের
যথেচ্ছ অক্ষরে,
শব্দে,
যৌবনে,
কবিতায়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Instagram did not return a 200.
Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Your share and comment are an inspiration to us

X (Twitter)
Post on X
Pinterest
fb-share-icon
Instagram
FbMessenger
Copy link
URL has been copied successfully!