গ্রাম, বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মূল পটভূমি। এর প্রাণবন্ত ও প্রাকৃতিক রূপ আমাদের লোকজ ঐতিহ্যের মৌলিক বৈশিষ্ট্য। সরল মনের গ্রামীন কারুনৈপুন্য থেকে শুরু করে, হস্তনির্মিত তাতঁ শিল্প, মৃৎশিল্প, কাসাঁ ও পিতল শিল্প, বাশঁ ও বেত শিল্প এবং পাট শিল্পের মত এক সুবিশাল ভান্ডারে সমৃদ্ধ আমাদের বাংলাদেশ। এই হস্ত ও কারুশিল্প মানচিত্র | সিলেট বিভাগ -এর মাধ্যমে উপলদ্ধি করা যাবে সিলেট বিভাগ -এর প্রতিটি জেলার প্রতিটি কোন কতটা বিচিত্র এবং ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ । তাই এই মানচিত্র “সমৃদ্ধময় বাংলাদেশ” ।
সিলেট বিভাগ
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত এ অঞ্চলকে আধ্যাত্মিকতার রাজধানী বলা হয়, যা বাংলাদেশের উত্তর-পুর্বাংশে অবস্থিত। সিলেট জেলা পূর্বে জালালাবাদ নামে পরিচিত ছিল। শিল্প, প্রাকৃতিক সম্পদ ও অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ সিলেট, পর্যটন শিল্পের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সংস্কৃতিতে হাছন রাজা, রাধারমণ, দূর্বীণ শাহ, শাহ আব্দুল করিম সিলেট অঞ্চলকে নিয়ে গেছেন আরো উচ্চ শিখরে।
হস্ত ও কারুশিল্পের দিক দিয়ে প্রতিটি জেলার প্রতিটি কোন বৈচিত্র্যময় এবং ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ । ইউনেস্কো বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের শীতল পাটি বুননের ঐতিহ্যগত হস্তশিল্পকে কে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ নির্বস্তুক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে। এছাড়াও সিলেটের বেত শিল্প বর্তমানে বাংলাদেশের বেতের আসবাপত্রের চাহিদার সিংহভাগ পূরণ করছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে বর্তমানে সিলেটের বেত সামগ্রী আমেরিকা, ইংল্যান্ড সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। সিলেট অঞ্চলে মণিপুরী জনগোষ্ঠীর লোক বাস করে, যা আরও সমৃদ্ধ করেছে সিলেট কে। মনিপুরীদের তাঁত শিল্প আলাদা করে পরিচিত করবার মত একটি শিল্প।
ঐতিহ্যময় হস্ত ও কারুশিল্প মানচিত্র | সিলেট বিভাগ
জেলারগুলোর ঐতিহ্যময় হস্ত ও কারুশিল্প মানচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করা চেষ্টা করা হয়েছে । তথ্য বিষয়ক ভুল থাকলে সবার সহযোগিতা কামনা করছি । যে কোন ধরনের সংযোজন, বিয়োজন এবং সংযুক্ত করার জন্য প্রস্তুত। আপনার সহযোগিতায় আসতে পারে মানচিত্রের পূর্নতা ।
ঐতিহ্যময় হস্ত ও কারুশিল্প পূর্ণাঙ্গ মানচিত্র দেখতে ক্লিক করুন
সিলেট বিভাগের ঐতিহ্যময় হস্ত ও কারুশিল্প
মণিপুরী নৃ-গোষ্টির বয়ন শিল্প
শীতল পাটি
বেত শিল্প
বাঁশ শিল্প
সিলেট বিভাগের হস্ত ও কারুশিল্পের বিস্তারিত
মণিপুরী নৃ-গোষ্টির বয়ন শিল্প
সিলেট অঞ্চলে বর্তমানে সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলায় মণিপুরী জনগোষ্ঠীর লোক বাস করে। তাঁত শিল্পের সঙ্গে মনিপুরীদের রয়েছে যুগযুগান্তরের সম্পর্ক। মনিপুরী সমাজে মেয়েদের তাঁত শিল্পের অভিজ্ঞতাকে বিয়ের ক্ষেত্রে পূর্বযোগ্যতা হিসেবে দেখা হয়। এমনকি মেয়েরা যখন জন্ম নেয়, একটু বড় হলেই মায়েরা মেয়েদেরকে তাঁতে বুনন কাজ শেখায় এই উদ্দেশ্যে যে, এই কাজ শিখলে তাদের বিয়ের সময় এটা যৌতুকের একটা অংশ হিসাবে কাজ করবে।
- শ্রীমঙ্গল ও বিশেষ করে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের প্রায় ৬০টি গ্রাম মণিপুরী তাঁতশিল্পের জন্য বিখ্যাত।
- মনিপুরীদের বস্ত্র তৈরির তাঁতকল বা মেশিন প্রধানত তিন প্রকার যেমন, কোমরে বাঁধা তাঁত, হ্যান্ডলুম তাঁত ও থোয়াং।
- ক্লথ, স্কার্ফ, লেডিস চাদর, শাড়ি, তোয়ালে, মাফলার, গামছা, মশারী, ইত্যাদি ছোট কাপড় তৈরি হয়।
শীতল পাটি
শীতল পাটি এক ধরনের মেঝেতে পাতা আসন। এটি বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যগত কুটির শিল্প, যেখানে আবহমান গ্রাম বাংলার প্রকৃতি, রূপ এবং সৌন্দর্যকে কারুকাজের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়।
- মুর্তা বা বেত নামের গুল্মজাতীয় উদ্ভিদের ছাল থেকে এই পাটি তৈরি হয়।
- ইউনেস্কো ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের শীতল পাটি বুননের ঐতিহ্যগত হস্তশিল্পকে কে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ নির্বস্তুক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।
বেত শিল্প
বেত বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য বনজ সম্পদ। এটি একজাতীয় লতানো বা সোজা বেয়ে ওঠা পাম। বাংলাদেশের অনেক এলাকায় এটি রতন নামেও পরিচিত।
সিলেটের হবিগঞ্জ অঞ্চল বেতের জিনিসপত্র তৈরীর জন্য প্রসিদ্ধ। এখানকার প্রধান বেতজাত সামগ্রী হল চেয়ার, খাট, সোফাসেট, মোড়া, টেবিল, বুকসেলফ, জুরি, ব্যাগ, সুটকেস ইত্যাদি।
সম্ভাবনায় রপ্তানিপণ্যের তালিকায় নতুন করে আসতে পারে বেতশিল্প।
বাঁশ শিল্প
বাঁশ শিল্প দেশের অন্যতম প্রধান লোকশিল্প। বাংলাদেশের নিজস্ব শিল্প-সংস্কৃতির প্রতীক। সিলেটের হবিগঞ্জ অঞ্চল, বেতের জিনিসপত্রের সাথে বাঁশজাত পণ্য তৈরীর জন্যও বিখ্যাত। এখানে পাটি, চাটাই, ডুল, জাবার, হাতপাখা, ডুলা, খলই, ওড়া, পাইছা, ঝুঁড়ি, চালনা, কুলা, মুড়া, চাই ইত্যাদি নানা বাহারি জিনিসপত্র তৈরি হয়।
সিলেট বিভাগের জেলাসমূহ
০৪ টি জেলা নিয়ে সিলেট বিভাগ গঠিত ।
সুনামগঞ্জ
মৌলভীবাজার
হবিগঞ্জ