ছুটির-দিনের-সাজসজ্জা-dressup-x-Klubhaus-x-bfa-x-fxyz-web

ছুটির দিনের সাজসজ্জা

পোশাকের বৈচিত্র্যের চেয়ে বেশি মনোযোগ দিন নিজের সতেজ থাকার প্রতি, কেননা যেকোনো সাজেই সতেজতা সবচে গুরুত্বপূর্ণ। চোখের নিচে কালি পড়ে থাকলে কাজলে কি আর মন ভরে?

ফ্যাশন জগতে পোশাক বিষয়টা অনেকটা ‘যস্মিন স্থলে যদাচার’। জায়গা বুঝে, তার আশেপাশের চলাফেরার পরিবেশ ও মানুষজনের সঙ্গে সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে পোশাক নির্বাচন করা জরুরি। আর ছুটির দিনের সাজসজ্জা -য় যেন নিজের পরনের আরামটা সবচাইতে বেশি প্রাধান্য পায়
.

সপ্তাহ ভরে আমরা যে যার কাজকর্ম করে চলি, যাতে শেষের এক দুটো দিন ইচ্ছেমতো কাটাতে পারি। কারো একদিন, কারো দুইদিন, কারও বা ভিন্ন ভিন্ন দিনে ছুটি। সে যাই হোক, একটু ইচ্ছেমতো খাওয়াদাওয়া, ঘুরে বেড়ানো, আড্ডাবাজি– প্রিয় মানুষদের সঙ্গযাপন ইত্যাদি- এই তো ছুটির দিন। এ সময় সপ্তাহের অন্য দিন থেকে একটু আরামপ্রিয় স্বভাবে থাকি। এখনকার ভাষায় হলিডে মুড যাকে বলে আর কী। আর স্বভাবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পোশাক-পরিচ্ছদ, অন্যান্য সব অনুষঙ্গও তেমনটাই হওয়াই দরকার। তবে ছুটির দিনের স্থান ও পরিসর অনুযায়ী সাজগুলো কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিলে সুবিধা হবে।

ঘরোয়া আবহে

ছোটখাটো ঘরোয়া আয়োজন, কাজিনদের জন্মদিনের অনুষ্ঠান অথবা শুধুই একটা পারিবারিক দাওয়াত– বাঙালি ঘরেদোরে এমন উৎসব তো লেগেই থাকে। আর সপ্তাহের অন্য দিনগুলোতে সবাই এত ব্যস্ত থাকে যে সাধারণত ছুটির দিনেই এসব আয়োজন রাখা হয়, যাতে সবাই আসতে পারে। এসব ক্ষেত্রে পোশাকের জন্য আরামটাই সর্বাগ্রে রাখবেন। জিন্সের প্যান্ট, সঙ্গে ক্যাজুয়াল টিশার্ট– বা আরামদায়ক ফতুয়া রাখা যায়। সুতি শাড়ি, সাথে হালকা কাঠ বা তামার গয়না দারুণ মানাবে। বিয়ের মতো জমকালো অনুষ্ঠান না হলে খুব বেশি চটকদার পোশাক এড়িয়ে চলাই ভালো। এমন পোশাক পরা দরকার, যাতে চোখের আরাম– মনের আরাম, দুটোই হয়। উঁচু হিল বা আঁটোসাটো কোট-টাই, ভারি গয়না ইত্যাদি এসব পরিসরে এড়িয়ে যাওয়া ভালো। তবে পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনুষ্ঠানের ধরনটাও মাথায় রাখতে হবে।


image source: Klubhaus  facebook page

বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায়

কোনো একটা রেস্তোরাঁয় হৈ-হুল্লোড়ে মেতে ওঠা আড্ডা বা পিকনিকের মতো জায়গাগুলোতে অবশ্যই ক্যাজুয়াল ও সেমি-ক্যাজুয়াল পোশাক বেছে নিতে হবে। পোশাক যেন কিছুক্ষণ পরই বদলাতে ইচ্ছে না করে, এমন পোশাক সাথে রাখাই ভালো। কারণ বন্ধুদের সাথে আড্ডার তো আর সময়-টময় অত বাঁধাধরা থাকে না, পরিকল্পনাও অনেকটা ‘অন দ্য ফ্লো’ থাকে। হুটহাট চলে যাওয়া যায় আর অনেকটা সময় কাটানো যায় এমন আরামদায়ক টিশার্ট, জ্যাকেট, গাউন, স্কার্ট, ফতুয়া ইত্যাদি পোশাক এক্ষেত্রে ভালো পছন্দ হতে পারে।


image source: Klubhaus  facebook page

ঘুরতে গেলে

কাছেপিঠে ঘুরতে যাওয়া আর দূরে সফরের জন্য– এই দুই জায়গার পোশাক হবে আলাদা। কাছেপিঠে গেলে একটুখানি সাজগোজ করা যায়ই, কিন্তু দূরে মানে বাসে বা গাড়িতে করে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হলে হালকা পোশাক সাথে নেয়া ভালো। ছবি তোলায় ভালো আসবে এমন সব রঙ নির্বাচন করলে পোশাক নির্বাচন সবচেয়ে উপযোগী হবে এক্ষেত্রে। রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে বেরোলে সাথে সানগ্লাস, মাথায় টুপি এবং ত্বকে সানস্ক্রিন– এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে। রাতের বেলায় অবশ্য এসব কোনো চাপ নেই। তখন সাজগোজেই বেশি মন দেওয়া যায়।



image source: Klubhaus  facebook page

বাসায় অতিথি এলে

ছুটির দিনে অনেক সময় নিজেরাই হয়তো বাসায় ডেকে নেওয়া হয় বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনদের। তবে নিজের বাসায় অতিথি এলে যেহেতু বেশ কিছু কাজও করতে হয় আপ্যায়নের জন্য, সেক্ষেত্রে পোশাকটাও এমন হওয়া চাই– যাতে ঘরোয়া কাজ করতে সুবিধা হয়। কাছের লোকজন হলে তো ঘরোয়া পোশাকেই থাকা যায়, তবে একেবারে মলিন পোশাক এক্ষেত্রে এড়িয়ে চলুন। অতিথিদের সাথে আয়োজন করে ছবি তোলার পরিকল্পনা থাকলে একটু হালকা সাজ-পোশাকে নিজেকে সাজিয়ে তুলুন। ছুটির দিনে নিজেকে সাজানোর সাথে সাথে নিজের ঘরদোর, অবসরে সময় কাটানোর জায়গাগুলোর যত্ন নিন। পোশাকের বৈচিত্র্যের চেয়ে বেশি মনোযোগ দিন নিজের সতেজ থাকার প্রতি, কেননা যেকোনো সাজেই সতেজতা সবচে গুরুত্বপূর্ণ। চোখের নিচে কালি পড়ে থাকলে কাজলে কি আর মন ভরে?



image source: Klubhaus  facebook page

কিংবা একা একাই

সারাটা সপ্তাহ তো এর ওর সাথে যোগাযোগে ব্যস্ত থেকেই পার করে দিলেন। কখনো কাজে, কখনো অকাজে। কিন্তু নিজের সাথেই হয়তো ভালো করে সময় কাটানো হয়নি। তাই ছুটির দিনে সলো ডেট হতে পারে আপনার পছন্দের অবসর। লাঞ্চ, ডিনার বা শুধু এক কাপ কফি খেতেও নিজেকে সাজিয়ে-গুজিয়ে নিয়ে যেতে পারেন ডেটে। ইংরেজিতে ‘Dress for yourself’ বলে একটা কথা আছে। সেই পরামর্শ অনুযায়ী, এবার একেবারে নিজের জন্যই প্রস্তুত হন। ঠিক যেভাবে ইচ্ছা!

ফ্যাশন জগতে পোশাক বিষয়টা অনেকটা ‘যস্মিন স্থলে যদাচার’। জায়গা বুঝে, তার আশেপাশের চলাফেরার পরিবেশ ও মানুষজনের সঙ্গে সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে পোশাক নির্বাচন করা জরুরি। আর ছুটির দিনের সাজসজ্জায় যেন নিজের পরনের আরামটা সবচাইতে বেশি প্রাধান্য পায় এবং অতি চটকদার কিছুতে নিজেকে জড়িয়ে না নিতে হয়, সেদিকে খেয়াল রাখলেই পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে ছুটির দিনের সাজসজ্জা– তা সে যে ধরনের পোশাক বা সাজগোজের উপকরণই বেছে নেয়া হোক না কেন।


আপনার একটি শেয়ার আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

আপনার একটি শেয়ার আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা

X (Twitter)
Post on X
Pinterest
fb-share-icon
Instagram
FbMessenger
Copy link
URL has been copied successfully!