ফ্ল্যানেল শার্টের ইতিহাস
ফ্লানেলের উৎপত্তি ১৭শ শতাব্দীর ওয়েলসে। শীতের ঠাণ্ডা থেকে সুরক্ষার জন্য আরামদায়ক ও নরম কাপড় হিসেবে এটি জনপ্রিয় হয়। ঐতিহ্যগতভাবে এটি পশম দিয়ে তৈরি হতো, যা পরবর্তীতে তুলা এবং সিন্থেটিক মিশ্রণে রূপান্তরিত হয়েছে। ১৯৯০-এর দশকে গ্রাঞ্জ মিউজিক এবং কালচার ফ্ল্যানেল শার্টকে একটি ফ্যাশন ট্রেন্ড হিসেবে জনপ্রিয় করে তোলে।
ফ্ল্যানেল শার্টর ইতিহাসের আরো বিস্তারিত আর্টিকেলের শেষের দিকে দেয়া হলো।
বৈশিষ্ট্য ও ডিজাইন
১. চেক প্যাটার্ন: ফ্লানেল শার্ট মানেই প্রথমে যে বিষয়টি মনে আসে তা হলো এর চেক ডিজাইন। এটি ক্লাসিক এবং সব সময় কনটেম্পোরারি ফ্যাশন হিসেবে ধরা হয়।
২. আরামদায়ক কাপড়: ফ্লানেল নরম এবং হালকা হওয়ায় শীতের জন্য বেশ আরামদায়ক।
৩. বহুমুখিতা: ফ্লানেল শার্ট একাধিকভাবে পরা যায়—জ্যাকেট হিসেবে, বেস লেয়ার হিসেবে, বা টাইড-আপ স্টাইল হিসেবে।
বাংলাদেশে ফ্ল্যানেল শার্টের বিচরন
বাংলাদেশের শীত ছোট হলেও আরাম এবং স্টাইল বজায় রাখতে ফ্লানেল শার্ট একটি আদর্শ সমাধান। তুলনামূলক কম শীতেও এটি হালকা গরম এবং নরম অনুভূতি দেয়, যা আমাদের স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে মানানসই।
.
ফ্লানেল শার্ট স্টাইলিং টিপস
১. ক্যাজুয়াল লুক: জিন্স এবং স্নিকার্সের সঙ্গে মিড টোনের চেক ফ্লানেল শার্ট পরা যেতে পারে। স্ট্রিড ফ্যাশনের ভাইব দিবে।
২. লেয়ারিং: আমাদের দেশে লেয়ারিং পোশাক পরার জন্য শীত একটা বড় মৌসুম। জ্যাকেটের নিচে সহজেই ফ্লানেল শার্ট পরতে পারেন। সাথে মাফলার/ স্কার্ফ ঝুলিয়ে নিলেই হলো। দূর্দান্ত লাগবে আপনাকে।
৩. ওভারসাইজড লুক: ওভারসাইজড লুক একদম কারেন্ট ট্রেন্ড। লম্বা ফ্লানেল শার্টের সঙ্গে বেল্ট এবং বুট পরুন, যা একটি ট্রেন্ডি এবং কনটেম্পোরারি লুক দেবে।
ফ্লানেলের উৎপত্তি ও প্রাথমিক ব্যবহার
ফ্লানেলের উৎপত্তি হয় ১৭শ শতাব্দীর ওয়েলসে। এই কাপড়ের মূল উদ্দেশ্য ছিল শীতের ঠাণ্ডা থেকে সুরক্ষা প্রদান করা। তৎকালীন সময়ে এটি তৈরি হতো পশম দিয়ে, যা ছিল নরম, ঘন, এবং উষ্ণ। বিশেষত, ওয়েলসের গ্রামীণ জনগোষ্ঠী কঠিন শীতের আবহাওয়ায় টিকে থাকার জন্য এই কাপড়ের উপর নির্ভর করত।
ফ্লানেলের জনপ্রিয়তার শুরুর ধাপ
১৮শ এবং ১৯শ শতাব্দীতে ফ্লানেল কাপড় ব্রিটেন থেকে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ে। তখন এটি কেবল শ্রমজীবী শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, কারণ এই কাপড় আরামদায়ক হওয়ার পাশাপাশি কাজের সময় ঠাণ্ডা থেকে সুরক্ষার জন্য কার্যকর ছিল।
১৮০০-এর দশকে শিল্পবিপ্লবের সময় ফ্লানেলের উৎপাদন আরো বিস্তৃত হয়। তুলা এবং সিন্থেটিক ফাইবারের মিশ্রণে তৈরি ফ্লানেল সস্তা এবং সহজলভ্য হয়ে ওঠে, যা এটি সকল শ্রেণির মানুষের জন্য গ্রহণযোগ্য করে তোলে।
ফ্লানেলের সাথে চেক প্যাটার্নের সংযোগ
১৯শ শতাব্দীর মাঝামাঝি, চেক এবং প্লেড প্যাটার্ন ফ্লানেল শার্টের সাথে যুক্ত হয়ে যায়। এটি মূলত স্কটিশ এবং আইরিশ অভিবাসীদের মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়, যাঁরা চেক প্যাটার্নের টার্টান ডিজাইনের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীতে এটি শ্রমিকশ্রেণির পরিচয় হয়ে ওঠে এবং যুক্তরাষ্ট্রে “ব্লু-কলার” কর্মীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
ফ্লানেলের আধুনিক রূপ
ফ্লানেল শার্টের প্রবেশ গ্রাঞ্জ মিউজিকে
১৯৯০-এর দশকে ফ্লানেল শার্ট ফ্যাশনের নতুন স্তরে পৌঁছে যায়, বিশেষ করে গ্রাঞ্জ মিউজিক কালচারের মাধ্যমে। নীরব বিপ্লবী স্টাইল হিসেবে এটি সিয়াটলের ব্যান্ডগুলো, বিশেষত নির্ভানা এবং পার্ল জ্যামের মতো গ্রুপগুলোর মাধ্যমে পরিচিত হয়। গ্রাঞ্জ মিউজিকের শিল্পীরা ফ্লানেল শার্ট পরতেন তাদের শিকড়কে (শ্রমজীবী শ্রেণি ও গ্রামীণ সংস্কৃতি) প্রকাশ করার জন্য।
ফ্লানেল শার্ট পপ কালচারে
ফ্লানেল শার্ট ৯০-এর দশকের পপ কালচার এবং ফ্যাশনের প্রতীক হয়ে ওঠে। এটি শুধুমাত্র গ্রাঞ্জ ফ্যাশন নয়, ক্যাজুয়াল এবং হাই-ফ্যাশন উভয়ের মধ্যেই জায়গা করে নেয়। ব্র্যান্ডগুলো ফ্লানেলকে নতুন নতুন স্টাইল এবং কাটে উপস্থাপন করতে শুরু করে, যা একে একটি বহুমুখী ফ্যাশন আইটেমে রূপান্তরিত করে।
ফ্লানেল শার্টের বর্তমান গ্রহণযোগ্যতা
বর্তমানে ফ্লানেল শার্ট কেবল শ্রমজীবী শ্রেণির বা গ্রাঞ্জ সংস্কৃতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি ক্যাজুয়াল এবং ফরমাল উভয় পরিবেশে স্টাইলিশ আইটেম হিসেবে গ্রহণযোগ্য। বিশেষ করে, লেয়ারিং ফ্যাশনে ফ্লানেল একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।
আপনার একটি শেয়ার আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা

বিবি রাসেল: এক নারীর স্বপ্ন, একটি দেশের গর্ব
fayze hassan
বসন্ত উৎসবে রঙ বাংলাদেশ
bdfashion archive“পলাশেরও নেশা মাখি চলেছি দুজনে বাসনার রঙে মিশি শ্যামলে স্বপনেকুহু কুহু শোনা যায়, কোকিলের কুহুতান,…

অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশন, যেখানে লিঙ্গ বলে কিছু নেই!
fayze hassan
ব্র্যান্ডিং বনাম মার্কেটিং: সহজ কথায় পার্থক্য আর সংযোগ
bdfashion archive
রঙের গল্প: পরিচিত রঙগুলোর অজানা নাম
fayze hassan