প্রকৃতিকে ভালোবাসে বলেই মানুষ প্রকৃতির সংস্পর্শে আসতে চায়। প্রকৃতিও তার সৌন্দর্যের অপরূপ ভাণ্ডার মেলে ধরে কাছে টানে। এক লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার বর্গকিলোমিটারের এই ব দ্বীপে পরিচিত অপরিচিত দর্শনীয় স্থানের অভাব নেই। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক লীলা নিকেতন । এদেশে রয়েছে পাহাড়, সাগর, মাঠ, বিশাল নীল আকাশ– যা এক অপূর্ব সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে। পাহাড়, জলপ্রপাত, বনভূমি, নদী এদেশকে করে তুলেছে অপূর্ব রূপময়। বিশাল সৌন্দর্য ভান্ডার থেকে বাংলাদেশের সেরা দশটি পর্যটন স্পট সম্পর্কে জানা যাক ।
“বাংলার মুখ”
কবিতায় রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন-
বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রুপ
খুঁজিতে যাই না আর: অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে
চেয়ে দেখি ছাতার মতন বড়ো পাতাটির নিচে বসে আছে
ভোরের দোয়েল পাখি-চারিদিকে চেয়ে দেখি পল্লবের স্তূপ
জাম-বট-কাঁঠালের-হিজলের-অশথের ক’রে আছে চুপ;
ফণীমনসার ঝোপে শটিবনে তাহাদের ছায়া পড়িয়াছে;
মধুকর ডিঙ্গা থেকে না জানি সে কবে চাঁদ চম্পার কাছে
এমনই হিজল-বট-তমালের নীল ছায়া বাংলার অপরূপ রূপ।
একঘেয়ে জীবন থেকে মুক্তি পেতে, কিংবা অফিসের কাজের চাপ একটানা সামলাতে গিয়ে অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে, খোলা হাওয়ায় শ্বাস নিতে মানুষ ছুটে চলে দিগ দিগন্তে। এতে মন চাঙ্গা থাকে, কাজে কর্মে মন বসে।
বাংলাদেশের সেরা দশটি পর্যটন স্পট
TOURS AND TRAVELS IN BANGLADSEH











কক্সবাজার | Cox’s Bazar
বিশ্বের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক বালুময় সমুদ্র সৈকত, যা কক্সবাজার শহর থেকে বদরমোকাম পর্যন্ত একটানা ১২০কিমি বিস্তৃত। । বাংলাদেশের অন্যতম স্বাস্থ্যকর এবং পর্যটন স্পট কক্সবাজার, তার নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের জন্য বিখ্যাত।
কক্সবাজারে আদি নাম পালংকি। ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স নামক এক বৃটিশ কর্মকর্তা ১৭৯৯ সালে এখানে এসে একটি বাজার স্থাপন করেন। তার নামানুসারে কক্স সাহেবের বাজার এবং পরে কক্সবাজার হিসাবে পরিচিত লাভ করে।
পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে অনেক প্রতিষ্ঠান। বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিত হোটেল এবং বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন কর্তৃক নির্মিত মোটেল ছাড়াও সৈকতের নিকটেই ২০টি পাঁচতারা হোটেল রয়েছে। এছাড়া এখানে পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠেছে ঝিনুক মার্কেট এবং মায়ানমার, চীন এবং থাইল্যান্ড থেকে সমুদ্র পথে আসা বাহারি জিনিস পত্র নিয়ে গড়ে উঠেছে বার্মিজ মার্কেট, এখানে রয়েছে দেশের একমাত্র ফিশ একুরিয়াম, প্যারাসেইলিং, ওয়াটার বাইকিং, বিচ বাইকিং, কক্স কার্নিভ্যাল, সার্কাস শো, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কতৃক নির্মিত বিভিন্ন স্থাপত্য, শিশু পার্ক এবং অসংখ্য ফটোশুট স্পট। এছাড়া এখানে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্মিত হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সী একুরিয়াম এবং ডিজনি ল্যান্ড।
কক্সবাজারে বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠী বসবাস করে শহরটিকে করেছে আরও বৈচিত্র্যময়। এসব উপজাতিদের মধ্যে চাকমা সম্প্রদায় প্রধান।
কক্সবাজার কিভাবে যাবো
বাসে করে যেতে চাইলে গ্রিন লাইন, এস আলম, সোহাগ পরিবহণ, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী ঢাকা থকে সরাসরি কক্সবাজার যায়। এইসব বাসের সিট ভাড়া এক হাজার টাকা থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত।
ট্রেনে করে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়েও কক্সবাজার যাওয়া যায়। ট্রেনে যেতে চাইলে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সোনার বাংলা, সুবর্ন এক্সপ্রেস, তুর্না নিশিথা, মহানগর প্রভাতী বা গোধূলি ট্রেনে চট্টগ্রাম চলে আসতে হবে। তারপর, চট্টগ্রামের নতুন ব্রিজ এলাকা অথবা দামপাড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে এস আলম বা ইউনিক অথবা হানিফে করে কক্সবাজার যাওয়া যায়। বাস ভেদে ভাড়া ৪০০ থেকে ৬০০ পর্যন্ত হতে পারে।
প্লেনে করেও কক্সবাজার যেতে পারেন। নভেএয়ার, ইউ এস বাংলা , বাংলাদেশ বিমানে করে সরাসরি কক্সবাজার এয়ারপোর্ট যাওয়া যায় । সেখান থেকে মুল সৈকত ২০ মি: এর পথ ।
কক্সবাজারে ঘোরাঘুরি | পর্যটন স্পট
- কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
- কক্সবাজার রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড
- কক্সবাজার লাবনী বিচ
- কক্সবাজার কলাতলী বিচ
- হিমছড়ি
- কক্সবাজার ইনানি বিচ
- সোনাদিয়া দ্বীপ
- ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক
- টেকনাফ
- কানা রাজার সুড়ঙ্গ
- কুতুবদিয়া বাতিঘর
- আদিনাথ মন্দির, মহেষখালী

সুন্দরবন | SUNDARBAN
সুন্দরবন হলো বাংলাদেশের ফুসফুস । পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন বা লবণাক্ত বনাঞ্চল। যা যৌথভাবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অবস্থিত। বৃক্ষ বিস্ময়’ বলা হয় সুন্দরবনকে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্যে ভরপুর সুন্দরবন।
বাংলাদেশের উপকূল ধরে বিস্তৃত ২১°৩০´-২২°৩০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০০´-৮৯°৫৫´ পূর্ব দ্রাঘিমার মধ্যবর্তী স্থানে এ বনের অবস্থান। সুন্দরবন বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী ও বরগুনা অঞ্চল জুড়ে রয়েছে । ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার বাংলাদেশে ভিতরে। ৬২% রয়েছে বাংলাদেশে এবং বাকি অংশ ৩৮% রয়েছে ভারতের মধ্যে।
৬ ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।
সুন্দরবনের নামকরন
দ্বীপমালা সুন্দরবনের নামকরণ নিয়ে রয়েছে নানান মত। অনেকে মনে করেন, নামটির আক্ষরিক অর্থেই নিহিত রয়েছে তার পরিচয় । সুন্দরবন অর্থ সুন্দর জঙ্গল বা সুন্দর বনভূমি। সুন্দরবন নামের সম্ভাব্য আরেকটি উৎস মনে করা হয় সমুদ্রকে। সমুদ্রের তীরে বনের অবস্থান বলে ‘সমুদ্র বন’ থেকে কালক্রমে এর নাম হয়েছে সুন্দরবন- এমনটি ধারণা করেন অনেকে।
তবে অন্য এক জনশ্রুতিও আছে সুন্দরী গাছের পক্ষে। সাধারণভাবে গৃহীত ব্যাখ্যাটি হলো এখানকার প্রধান উদ্ভিদ সুন্দরী বৃক্ষের নাম থেকেই এ বনভূমির নামকরণ হয়েছে।
স্বীকৃতি
- সুন্দরবন ৬ ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।
- ১৯৯২ সালের ২১ মে সুন্দরবন রামসার স্থান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ
রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ আবাসস্থল হলো সুন্দরবন। সুন্দরবনে প্রায় ২৮৯ প্রজাতির স্থলজ প্রাণী বাস করে। রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছাড়া সুন্দরবনের উল্লেখযোগ্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে রয়েছে চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, রেসাস বানর, বন বিড়াল, সজারু, উদ বিড়াল এবং বন্য শূকর।
সরীসৃপের প্রজাতির মধ্যে সুন্দরবনের সবচেয়ে বড় সদস্য মোহনার কুমির। সাপের মধ্যে রাজগোখরা, অজগর, কেউটে এবং কয়েক প্রজাতির সামুদ্রিক সাপ উল্লেখযোগ্য।
এখানকার অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি হলো মৌমাছি । স্থানীয়ভাবে পরিচিত মৌয়ালদের পেশা মধু সংগ্রহ করা। তারা বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে বন থেকে মধু সংগ্রহ করে।
সুন্দরবনের প্রধান বনজ বৈচিত্রের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সুন্দরী, গেওয়া, গরান এবং কেওড়া । ১৯০৩ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের হিসেব মতে সর্বমোট ২৪৫টি শ্রেণী এবং ৩৩৪টি প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে এখানে।
শিল্প
নিউজপ্রিন্ট, দেয়াশলাই, হার্ডবোর্ড, নৌকা, আসবাবপত্র সুন্দরবন থেকে আহরিত কাঁচামালের উপর নির্ভরশীল। এছাড়া রয়েছে ঘর ছাওয়ার পাতা, মধু, মৌচাকের মোম, মাছ, কাঁকড়া এবং শামুক-ঝিনুক।
সুন্দরবনে ঘোরাঘুরি | পর্যটন স্পট
- করমজল
- হারবাড়িয়া
- কাছখালি
- কটকা
- কটকা বীচ
- জামতলা সৈকত
- মান্দারবাড়িয়া সৈকত
- হিরন পয়েন্ট
- এবং দুবলার চর।
সুন্দরবন কিভাবে যাবো
সুন্দরবনে একা ভ্রমনের সুযোগ নেই। এখানে ভ্রমণ করতে চাইলে ফরেস্ট অফিসার থেকে নির্ধারিত ফি দিয়ে অনুমতি নিতে হবে, সাথে নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে ঘুরতে যেতে হবে।
বাস এ গেলে ঢাকা থেকে সোহাগ পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ এবং ঈগল পরিবহণ করে খুলনায় পর্যন্ত। লঞ্চ এ গেলে ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে লঞ্চ নিয়মিত ছেড়ে যায় খুলনার উদ্দেশ্যে । আর ট্রেনে যেতে চাইলে ঢাকা থকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন সকালে এবং চিত্রা এক্সপ্রেস সন্ধ্যায় ছেড়ে যায় খুলনার উদ্দেশ্যে। খুলনার কাটাখালি নামক জায়াগায় নেমে সেখান থেকে বাস, সিএনজি করে মংলা যাওয়া যায়। মংলা হয়ে সুন্দরবন । মংলা থেকে লঞ্চে ৩ ঘণ্টার মত সময় লাগবে।

সাজেক ভ্যালী | SAJEK VALLEY
সাজেক ভ্যালি এমনই আশ্চর্য্যজনক জায়গা যেখানে একই দিনে প্রকৃতির তিনটি রূপ দেখতে পাবেন । কখনও বা খুব গরম অনুভূত হবে, তারপর হটাৎ হালকা থেকে ঝুম বৃষ্টি আবার চোখের পলকেই মেঘের ঘন কুয়াশা যা আপনাকে ছুয়ে যাচ্ছে । এই মেঘের চমৎকৃত খেলা আরো একটা সময় দেখতে পাবেন। তা হলো খুব সকাল বেলা। সূর্যদয়ের সময় এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে তুলোর কার্পেট বিছিয়ে রাখে । আর আপনি উপর থেকে এই বৈচিত্রময় দৃশ্য দেখে বিমোহিত হবেনই ।
আর সন্ধ্যার পর রাতের আকাশ তো কোটি কোটি তারার পশরা সাজিয়ে বসে । আকাশ পরিস্কার থাকলে দেখা মিলবে মিল্কিওয়ে বা ছায়াপথের ।
সাজেক ভ্যালির উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ১৮০০ ফুট। যা রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত অবস্থিত হলেও এর যাতায়াত সুবিধা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে। খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে সাজেকের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। আর দীঘিনালা থেকে ৪৯ কিলোমিটার।
সাজেক ভ্যালি কিভাবে যাবো
সাজেক ভ্যালি রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত অবস্থিত হলেও এর যাতায়াত সুবিধা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে। এছাড়া রাঙামাটি থেকে নৌপথে কাপ্তাই হয়ে পায়ে হেঁটে সাজেক যাওয়া যায়। চট্টগ্রাম থেকে যেতে চাইলে চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি খাগড়াছড়ি যাওয়া যায় । খাগড়াছড়ি পৌছে সেখান থেকে চান্দের গাড়ি কিংবা সিএনজি নিয়ে সাজেক যাওয়া যায় ।
খাগড়াছড়ি থেকে যেতে হলে দীঘিনালা সেনাবাহিনীর ক্যাম্প পার হয়ে সাজেক যেতে হয়। সেনাবাহিনীর ক্যাম্প পার হয়ে ১০নম্বর বাঘাইট হাট পুলিশ ও সেনাবাহিনী ক্যাম্প। এখান থেকেই প্রথমে যাওয়ার মূল অনুমতি নিতে হবে। তারপর কাসালং ব্রিজ। যা কাসালং নদীর উপরে অবস্থিত। এর পর পড়বে টাইগার টিলা আর্মি পোস্ট ও মাসালং বাজার। বাজার পার হলে পরবে সাজেকের প্রথম গ্রাম রু্ইলুই পাড়া।
সমতল থেকে এই রুইলই পাড়া গ্রামের উচ্চতা ১৮০০ ফুট। এই গ্রামের আদি জনগোষ্ঠী লুসাইদের বসবাস। এছড়া পাংকুয়া এ ত্রিপুরারও বাস করে। রুইলুই পাড়া থেকে অল্প সময়ে পৌঁছে যাবেন সাজেক ভ্যালি।
সাজেকের বিজিবি ক্যাম্প হলো বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিজিবি ক্যাম্প।
সাজেক ভ্যালিতে ঘোরাঘুরি
সাজেকের রুইলই পাড়া থেকে দুই থেকে আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টা ট্রেকিং করে দেখে আসতে পারেন সুন্দর কমলক ঝর্ণা। সাজেকের শেষ গ্রাম কংলক পাড়া। এটিও লসুই জনগোষ্ঠীদের একটি গ্রাম। কংলক পাড়া থেকে ভারতে লুসাই পাহাড় দেখা যায়। আর এই লুসাই পাহাড় থেকেই কর্ণফুলী নদীর উৎপত্তি। সাজেক থেকে ফেরার সময় হাজাছড়া ঝর্ণা, দীঘিনালা ঝুলন্ত ব্রিজ ও দীঘিনালা বনবিহারও দেখা মেলে।
সাজেক ভ্যালিতে কোথায় থাকবো
সাজেক ভ্যালিতে থাকবার জন্য আধুনিক সুযোগ সুবিধা সহ শখানেক রিসোর্ট আছে । সেনাবাহিনীর তিনটি রিসোর্ট ছাড়াও আদিবাসীদের কটেজ গুলোতে থাকতে পারবেন । এ কটেজ গুলো তুলনামূলক কম ভাড়াতে পাওয়া যায় । সাজেকের সব কটেজ থেকেই সুন্দর ভিউ পাওয়া যায় ।
সাজেক ভ্যালি বাড়তি সতর্কতা
- সাজেকে অনেক জায়গায় বিদ্যুত নেই । সোলার প্লান্ট ব্যাবস্থা আছে । সাথে পাওয়ার ব্যাক রাখতে পারেন ।
- মোবাইল নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে রবি এবং টেলিটক এর সার্ভিস ভালো ।
- ঝামেলা এড়াতে কটেজ কিংবা রুম বুকিং দিয়ে যাওয়াই ভালো ।
- আদিবাসীরা খুব সহজ সরল । তাদের সাথে ভদ্র ব্যাবহার করুন। এবং তাদের ছবি তোলার ক্ষেত্রে তাদের অনুমতি নিবেন।

কুয়াকাটা | KUAKATA
বাংলাদেশের সাগর কন্যা নামে পরিচিত কুয়াকাটা, বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা পৌরসভায় অবস্থিত। প্রায় ১৮ কিঃমিঃ দীর্ঘ এই কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে একই সাথে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখা যায়। আর এ জন্যই কুয়াকাটা অন্য সকল সমুদ্র সৈকত থেকে আলাদা। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পূর্ব প্রান্তের গঙ্গামতির বাঁক থেকে সব থেকে ভালো ভাবে সূর্যদয় দেখা যায়। আর সূর্যাস্ত দেখার ভাল জায়গা হচ্ছে কুয়াকাটার পশ্চিম সৈকত।
কুয়াকাটার নামকরন
কুয়াকাটা নামের পেছনে রয়েছে আরাকানদের এদেশে আগমনের সাথে জড়িত ইতিহাস। ‘কুয়া’ শব্দটি এসেছে ‘কুপ’ থেকে। ধারণা করা হয় ১৮ শতকে মুঘল শাসকদের দ্বারা বার্মা থেকে বিতাড়িত হয়ে আরাকানরা এই অঞ্চলে এসে বসবাস শুরু করে। তখন এখানে সুপেয় জলের অভাব পূরণ করতে তারা প্রচুর কুয়ো বা কুপ খনন করেছিলেন, সেই থেকেই এই অঞ্চলের নাম হয়ে যায় কুয়াকাটা!
সংস্কৃতি এবং উৎসব
কুয়াকাটা হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান। ভক্তরা এখানে ‘রাস পূর্ণিমা’ এবং ‘মাঘী পূর্ণিমা’ উৎসবে উপস্থিত হন। এই উপলক্ষে তীর্থযাত্রীরা উপসাগরে পবিত্র স্নান করেন এবং ঐতিহ্যবাহী মেলায় অংশ নেন। সমুদ্র সৈকতের পাশে অবস্থিত ১০০ বছরের পুরানো বৌদ্ধ মন্দিরে গৌতম বুদ্ধের মূর্তি এবং দু’টি ২০০ বছরের পুরানো কূপ রয়েছে।
রাস পূর্ণিমা : মানবতা রক্ষায় দ্বাপর যুগে কংস রাজাকে বস করে পূর্ণিমা তিথিতে ঘটে রাধা-কৃষ্ণের পরম প্রেম। সেই থেকেই মূলত রাস উৎসবের প্রচলন। সত্য ও সুন্দরের জয়ের আকাঙ্ক্ষায় প্রায় ২০০ বছর ধরে কলাপাড়ায় রাস উৎসব উদযাপন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। রাস মেলা প্রাঙ্গণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পদাবলী কীর্তন ও ধর্মীয় আলোচনার আয়োজন করা হয় ।
কুয়াকাটায় ঘোরাঘুরি | পর্যটন স্পট
- কুয়াকাটা নাম করনের সেই কুয়া
- শুঁটকি পল্লী
- বৌদ্ধ মন্দির
- সীমা বৌদ্ধ বিহার
- মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ বিহার
- কেরানিপাড়া
- গঙ্গামতির জঙ্গল
- ফাতরান বন (সুন্দরবনের পূর্বাংশ )
- লাল কাকড়ার চর
- ঝিনুক বীচ
- লেবুর চর / লেম্বুর চর
- তিন নদীর মোহনা
কুয়াকাটা কীভাবে যাবো
নদী ও সড়ক পথে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যাওয়া যায়। লঞ্চে ঢাকা সদরঘাট থেকে পটুয়াখালী বা বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা। আর বাসে যেতে চাইলে ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা। তবে সবচেয়ে সহজ ও আরামের কথা বিবেচনা করলে কুয়াকাটা যেতে নদী পথই উত্তম।

জাফলং | JAFLONG
প্রকৃতি কন্যা হিসাবে সারাদেশে এক নামে পরিচিত সিলেটের জাফলং । বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটনস্থল হিসেবে পরিচিত। খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই জাফলং-এর প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য আপনাকে বুদ করে রাখবে । সিলেট ভ্রমণে এসে জাফলং না গেলে ভ্রমণই যেন অপূর্ণ থেকে যায়। জাফলংয়ে শীত ও বর্ষা মওসুমের দুই ধরনের সৌন্দর্য রূপ দেখতে পাওয়া যায়। বর্ষায় জাফলং এর রূপ লাবণ্য যেন ভিন্ন মাত্রায় ফুটে ওঠে। মৌসুমী বায়ুপ্রবাহের ফলে ভারত সীমান্তে প্রবল বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদীর স্রোত বেড়ে গেলে নদী ফিরে পায় তার প্রাণ, আর হয়ে ওঠে আরো মনোরম। ডাওকি নদীর পানির স্বচ্ছতাও জাফলং-এর অন্যতম আকর্ষণ।
তবে ডাউকি পাহার থেকে কল কল ধ্বনিতে নেমে আসা ঝর্না গুলো যেমন আপনাকে বিমোহিত করবে একই সাথে মন খারাপও করে দিবে।
ঐতিহাসিকদের মতে বহু হাজার বছর ধরে জাফলং ছিল খাসিয়া জৈন্তা-রাজার অধীনে থাকা এক নির্জন বনভূমি৷ ১৯৫৪ খ্রীস্টাব্দে জমিদারী প্রথার বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে খাসিয়া-জৈন্তা রাজ্যের অবসান ঘটলেও বেশ কয়েক বছর জাফলং এর বিস্তীর্ণ এলাকা পরিত্যাক্ত অবস্থায় পরেছিল৷ পরবর্তীতে ব্যবসায়ীরা পাথরের সন্ধানে বিভিন্ন এলাকা থেকে নৌপথে জাফলং আসতে শুরু করেন৷ আর পাথর ব্যবসার প্রসার ঘটতে থাকলে একসময় গড়ে ওঠে নতুন জনবসতি৷
জাফলংয়ে ঘোরাঘুরি | পর্যটন স্পট
- ভারতের ডাউকি বন্দরের ঝুলন্ত সেতু
- ডাউকি নদী
- খাসিয়াচুঞ্জি
- সংগ্রামপুঞ্জি চা বাগান
- জৈন্তাপুর
- তামাবিল
- লালাখাল ( জাফলং থেকে একটু দুরে )
জাফলং কিভাবে যাবো
দেশের নানা প্রান্ত থেকে নানার উপায় (বাস, ট্রেন এবং আকাশপথে ) আসা যায় চায়ের দেশ সিলেটে । সিলেট শহর থেকে বাস, প্রাইভেট কার, সিএনজি বা লেগুনায় করে যাওয়া যায় জাফলং। এছাড়া শিবগঞ্জ থেকে জাফলং এর উদ্দ্যশ্যে বাস ছাড়ে ।

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ | St. Martin’s Island
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন যেখানে আকাশের নীল আর সমুদ্রের নীল মিলেমিশে একাকার। খোলামেলা বালুকাময় সৈকত আর সমুদ্রের বিরামহীন গর্জন যেন নীল রঙের রাজ্যে পরিণত করেছে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে।এখানে যেন প্রকৃতি তার দুইহাত মেলে সব সৌন্দর্য ঢেলে দিয়েছে।
দক্ষিণের স্বর্গ নামে পরিচিত এই দ্বীপে সারি সারি নারিকেল গাছ, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে চলা গাঙচিল, সৈকতের স্নিগ্ধ বাতাসে গা জুড়িয়ে নেওয়া, কেয়াবন আর সাগরলতার মায়াময় স্নিগ্ধতায় মন জুড়িয়ে যায় নিমিষেই। ভাটায় জেগে উঠা নান্দনিক প্রবাল প্রাচীর,উড়ে চলা গাঙচিল, পশ্চিম বিচ থেকে দেখা সূর্যাস্থের অপরুপ দৃশ্য, স্নিগ্ধ বাতাস আর অগভীর সমুদ্রের স্বচ্ছ নীলে বাধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠার লোভে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক এই দ্বীপে তাদের পদচিহ্ন আঁকেন।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের আয়তন প্রায় ৮ বর্গকিলোমিটার এবং উত্তর ও দক্ষিণে লম্বা। এই দ্বীপের তিন দিকের ভিত শীলা যা জোয়ারের সময় তলিয়ে যায় এবং ভাটার সময় জেগে উঠে। স্থানীয়ভাবে পেজেলা নামে পরিচিত এক ধরনের সামুদ্রিক শৈবাল সেন্টমার্টিনে প্রচুর পাওয়া যায়।
সেন্টমার্টিনকে নারকেল জিঞ্জিরা-ও বলা হয়ে থাকে
।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ঘোরাঘুরি | পর্যটন স্পট
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ এক রাত না থাকলে উপভোগ করা সম্ভব নয় । ভালো হয় দুই রাত থাকলে । আর যদি পূর্নিমা রাত হয় তবে সেই রাতটা হবে আপনার জীবনের স্মরণীয় একটা রাত। নিজেকে চিনতে এবং বেচে থাকার মানে নতুন করে আবিস্কার করতে পারবেন।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ছাড়াও আপনি ছেড়া দ্বীপ , প্রবাল দ্বীপ, নারিকেল জিঞ্জিরা ঘুরবেন । এছাড়া সেন্ট মার্টিনে স্কুবা ড্রাইভিং এবং স্নোরকেলিং করে সমুদ্রের বিচিত্রতা উপভোগ করতে পারবেন ।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ কিভাবে যাবো
ঢাকা চট্টগ্রাম থেকে বাসে করে টেকনাফ যেতে হয়। টেকনাফ থেকে সমুদ্রপথে জাহাজে করে সেন্টমার্টিন যেতে হয়। এছাড়া সাগরপথে চট্টগ্রাম থেকে ২৩৬ কিলোমিটার দূরে সেন্ট মার্টিন যেতে পারবেন সরাসিরি এমভি বে ওয়ান জাহাজে । এটা সত্যিই উপভোগ্য হবে । যদিও আমার যাওয়া হয় নাই ।

শ্রীমঙ্গল | SREEMANGAL
দুটি পাতার একটি কুঁড়ির দেশ সিলেট। সেই চায়ের দেশের রাজধানী যেন শ্রীমঙ্গল। মৌলভীবাজার এর শ্রীমঙ্গল উপজেলা। যেদিকে দু’চোখ যায় দেখতে পাওয়া যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। সুনীল আকাশ, সাজানো সবুজ চা বাগান আর সুউচ্চ সবুজ পাহাড়ি টিলার নয়নাভিরাম দৃশ্যাবলির দেশ শ্রীমঙ্গল। এখানে যেমন রয়েছে পাহাড় এবং সবুজ অরণ্য তেমনি রযেছে হাওঢ় এবং বিল। পাশাপাশি আদিবাসী মনিপুরী, গাড়ো, খাসিয়া, টিপরাদের বসবাস । আদিবাসীদের কালচার দেখলে আপনার ভ্রমন হবে আরো বৈচিত্রময়। এছাড়া চা বাগান, রাবার বাগান, লেবু বাগান, পানের বরজ কিংবা আনারর এর বাগান আপনাকে নয়নাভিরাম করে রাখবে।
শ্রীমঙ্গল বেড়ানো যায় বারো মাস জুড়েই তবে যখন খুব বৃষ্টি হয় তখনকার শ্রীমঙ্গল সব চাইতে আলাদা এবং সুন্দর আর শীতের সময়কার সকালের কুয়াশা ঘেরা শ্রীমঙ্গল দিবে আলাদা অনুভুতি ।
শ্রীমঙ্গলে ঘোরাঘুরি | পর্যটন স্পট
- মাধবকুন্ড জলপ্রপাত
- হামহাম জলপ্রপাত
- লাউয়াছড়া উদ্যান
- নীল কন্ঠের সাত রঙের চা
- মাধবপুর লেক
- লাসুবন গিরিখাদ
- বাইক্কা বিল
- রাবার বাগান
- স্বর্নালী ছড়া
- শিতেস বাবুর চিড়িয়াখানা
- চা গবেষণা কেন্দ্র
- চা জাদুঘর
- বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিসৈাধ
শ্রীমঙ্গল কিভাবে যাবো
ঢাকা থেকে রেল কিংবা সড়ক পথে সরাসরি শ্রীমঙ্গল যাওয়া যায়। শ্রীমঙ্গলের উদ্দ্যোশে ঢাকার ফকিরাপুল ও সায়দাবাদ থেকেি এসি এবং নন এসি বাস যায় শ্রীমঙ্গলে। শ্রীমঙ্গল পৌছেঁ সি.এন.জি, অটো রিকসা কিংবা বাসে করে পর্যটন স্পটগুলো যাওয়া যায় ।

টাঙ্গুয়ার হাওর | TANGUAR HAOR
স্থানীয় লোকজনের কাছে নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল নামেও পরিচিত হাওরটি আমাদের টাঙ্গুয়ার হাওর যা বাংলাদেশের বৃহত্তর একটি হাওর। টাঙ্গুয়ার হাওর সিলেটেরসুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার স্থান হিসাবে পরিচয়, প্রথমটি সুন্দরবন।
টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে মেঘালয়ের পাহাড়গুলো দেখা যায় । অথৈ পানির উপর আকাশের নীলাভ প্রতিফলন আর আবছা দূর পাহাড় যেন প্রকৃতির অকৃপন দান। বর্ষায় যেন পুরো যৈাবন পায় পুরো হাওর । ঘুরতে আসার উপযুক্ত সময় হল বর্ষাকাল । শীতের সৌন্দর্য আলাদা। স্থানীয় পাখি ছাড়াও অতিথি পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত থাকে টাঙ্গুয়ার হাওর। যদিও তখন হাওরে অনেকাংশে পানি শুকিয়ে যায় ।
টাঙ্গুয়ার হাওরে আরেক সৌন্দর্য হল সারি সারি হিজল গাছ পানির ভিতর থেকে এক পা উচু করে সৌন্দর্য বিলিয়ে যাচ্ছে দায়িত্ব নিয়ে। এছাড়াও নীল শাপলা, পানি ফল, শোলা, স্বর্নলতা, বনতুলসী টাঙ্গুয়ার হাওর এর শোভা বাড়িয়েছে।
টাঙ্গুয়ার হাওরে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৪৫টি ভাসমান দ্বীপ বা ভাসমান গ্রাম আছে।
টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘোরাঘুরি | পর্যটন স্পট
- বোটে বসে অপরূপ সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত
- ওয়াচ টাওয়ারের আশেপাশে স্বচ্ছ পানিতে হাওরের তলদেশ।
- নিলাদ্রি লেক ( শহীদ সিরাজ লেক )
- বারিক টিলা
- যাদুকাটা নদী
- লাউড়ের গড়
টাঙ্গুয়ার হাওরে কিভাবে যাবো
ঢাকা সায়েদাবাদ বাসস্টান্ড থেকে সরাসরি সুনামগঞ্জের উদশ্যে বাস যায়। পৌছাতে সময় লাগে ৬ ঘন্টা । সুনামগঞ্জ নেমে সুরমা নদীর উপর বড় ব্রিজের কাছে লেগুনা/সি.এন.জি/বাইক এ করে তাহিরপুর যেতে হবে। তাহিরপুর নৌকা ঘাট থেকে নৌকা ভাড়া নিয়ে বেড়িয়ে আসুন টাঙ্গুয়ার হাওর।

বান্দরবান | BANDARBAN
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রধানমানদন্ড সবুজের সমারোহ আর মেঘ ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছে যার আছে সে যেন পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান ঘুরে আসে। বান্দরবন বাংলাদেশের নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের লীলা ভূমি। যেখানে বাংলার দারজিলিং খ্যাত নীলগিরি পাহাড় এবং মেঘের লুকোচুরি আপনাকে বিমোহিত করে রাখবে। সমুদ্র পৃষ্ট থেকে ২২০০ ফুট উচ্চতায় দাড়িয়ে চোখে পড়বে সারি সারি পাহাড়ের সাথে মেঘের আলিঙ্গন। আর আকাশ পরিস্কার থাকলে অঅপনার চেখে পড়বে বগা লেক, বাংলাদেশের পঞ্চম সর্বোচ্চ পাহাড়চূড়া কেউক্রাডাং, কক্সবাজার এর সমুদ্র সৈকত, চট্টগ্রাম বন্দর এবং সাঙ্গু নদী। যে নদী ধরে পৈাঁছে যাবেন থানচি উপজেলায়। থানচি উপজেলা রিমাক্রি ইউনিয়ন হয়ে জেতে পারবেন নাফাখুম। বাংলার নায়গ্রা নামে খ্যাত এই নাফাখুম হলো বাংলাদেশের অন্যতম বড় জলপ্রপাত ।
বান্দরবনে ঘোরাঘুরি | পর্যটন স্পট
নাফাখুম, দেবতাখুম ছাড়াও বান্দরবনে ছড়িয়ে আছে ছোটবড় অনেক ঝর্না । যেমন : ফাইপি ঝর্না, সাইংপ্রা ঝর্না, থাইকোয়াইন ঝর্না, বরইতলী ঝর্না, তুইনুম ঝর্না, জিংসিয়াম সাইতার ঝর্না, ওয়াংপা ঝর্না, লাংলোক ঝর্না, শীলবান্ধা ঝর্না, লিখ্যিয়াং ঝর্না, তিনাম ঝর্না, পালং খিয়াং ঝর্না, বাকলাই ঝর্না, দামতুয়া ঝর্না, ত্ল্রাবং ঝর্না বা ডাবল ঝর্না, চিংড়ি ঝর্না, রূপমুহরী ঝর্না, জাদিপাই ঝর্না, লুং ফের ভা সাইতার ঝর্না, তিনাপ সাইতার ঝর্না, রৃজুক ঝর্না উল্লেখযগ্য।
এছাড়া বান্দরবান জেলার দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে চিম্বুক পাহাড় রেঞ্জ, কেওকারাডং, মেঘলা পর্যটন কমপেস্নক্স, মিরিংজা পর্যটন, নাফাখুম, রেমাক্রি, নীলাচল, নীলগিরি, থানচি, প্রান্তিক লেক, রাজবিহার, উজানিপারা বিহার, সাংগু নদী, শৈল প্রপাত, তাজিডং, ডিম পাহাড় , সিপ্পি আরসুয়াং, মুনলাই পাড়া, রুমা , লামা, মারায়নতং, কংদুক বা যোগী হাফং, আন্দারমানিক, মোদক মুয়াল বা জোতলাং, সাকা হাফং, সাতভাই খুম, মিলনছড়ি, আলির সুড়ঙ্গ, স্বর্ণমন্দির, তিন্দু, মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র ইত্যাদি
বান্দরবনে কিভাবে যাবো
দেশের যেকোন এলাকা থেকে বান্দরবান যাওয়ার জন্য প্রথমে চট্টগ্রাম যেতে হবে। সেখানের বহদ্দারহাট টার্মিনাল থেকে বাস-এ করে যেতে হবে বান্দরবান। আর ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবান পর্যন্ত বাস সার্ভিস আছে। এতগুলো জায়গা একসাথে দেখা সম্ভব নয় বলে আগে থেকেই ঠিক করে নিতে হবে কোন স্পর্ট গুলো যেতে চান। সব থেকে ভালো হয় স্থানীয় গাইড নিয়ে নেয়া। তারা আপনাকে সহোযোগীতা করবে যে কোনো উল্ল্যেখযোগ্য স্পর্টে যাবার পথে ছোট ছোট স্পর্ট গুলো দেখে যেতে পারেবেন।

সীতাকুন্ড | SITAKUNDA
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সীতাকুন্ড উপজেলা। এক পাশে সাগর অন্য পাশে পাহাড়; এই দুই মিলে সীতাকুন্ডকে করেছে আরো বৈচিত্রময়। সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চুড়ায় আছে ঐতিহাসিক চন্দ্রনাথ মন্দির। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে চন্দ্রনাথ পাহাড় এর উচ্চতা প্রায় ১১৫২ ফুট। পাহাড়ের চূড়া থেকে দেখতে পাবেন সমুদ্র যা চূড়ায় ওঠার সব ক্লান্তি দুর করে আপনাকে মুগ্ধ করবেই। পাহাড়ে যাবার পথে একটি ঝরনার দেখা মিলবে, এ ছাড়া একটু গভিড়ে গেলে দেখা মিলবে জুম ক্ষেত এবং চাষ করা ফুলের বাগান। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের উপরেই চন্দ্রনাথ মন্দির অবস্থিত।
শীতাকুন্ডের আরেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার হল খৈইয়াছড়া ঝর্ণা। খৈইয়াছড়ার ১৩টি ধাপের এক একটি যেন এক এক ধরনের মুগ্ধতা নিয়ে আসে। ঝর্ণার ধাপ গুলো দেখতে বেশ সময় লাগে তাই এক দিনে অন্য কোথাও যাবার প্লান রাখা যাবে না।
শীতাকুন্ড থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দুরে আরেক বিষ্ময় হলো গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত। একদিকে মনে হবে সদ্য জেগে ওঠা ঘাসের চাদর অন্য দিকে উত্তাল সাগরের গর্জন। বিষ্ময় নিয়ে শুধু তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করবে। আর যদি জোয়ার থাকে তবে ঘাসের উপর সমুদ্রের আচড়ে পরা ঢেউ আপনাকে আপলুত করতে বাধ্য।
সীতাকুন্ডে ঘোরাঘুরি | পর্যটন স্পট
- চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মন্দির
- সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক
- ঝরঝরি ট্রেইল
- গুলিয়াখালী বিচ
- কমলদহ ট্রেইল
- বাঁশবাড়িয়া সি বিচ
- সুপ্তধারা ঝরনা
- কুমিরা ঘাট
- ঝরনা-ঝিরি ও পাহাড়-লেক
সীতাকুন্ড কিভাবে যাবো
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনও বাসে করেই যেতে পারবেন সীতাকুণ্ড। এছাড়া ঢাকা থেকে সীতাকুণ্ড মেইল ট্রেনে করে সীতাকুণ্ড আসতে পারবেন। সীতাকুন্ড নেমে আপনার ভ্রমন প্লান অনুযায়ী স্থানীয় বাহন দিয়ে ঘুরতে পারবেন।
এছাড়াও
বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানগুলো হলো
- দীঘিনালা বিহার
- বিছানাকান্দি
- রঙরাং পাহাড়
- বান্দরবানের বোল্ডিং খিয়াং
- ইদ্রাকপুর দুর্গ
- লালবাগ কেল্লা
- নীলগিরি
- নীলাচল ও শুভ্রনীলা
- মনপুরা
- চলনবিল
- আহসান মঞ্জিল
- মহাস্থানগড়
- শুভলং ঝরনা
- সোমপুর মহাবিহার
- রাজবন বিহার
- চিম্বুক পাহাড়
- আমিয়াখুম ঝরনা
- নিঝুমদ্বীপ
- স্বর্ণমন্দির
- কান্তজির মন্দির
- ষাট গম্বুজ মসজিদ
- মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
- ছেড়াদ্বীপ
- সোনাদিয়া দ্বীপ
- তাজহাট জমিদার বাড়ি
- বিরিশিরি
বাংলাদেশের সেরা পর্যটন স্পটগুলোর ছবি
সোর্স-
জাতীয় পত্রিকা
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
সাজেক ভ্যালি
জাফলং
- বাংলাদেশের সেরা দশটি পর্যটন স্পট
- কক্সবাজার | Cox's Bazar
- সুন্দরবন | SUNDARBAN
- সাজেক ভ্যালী | SAJEK VALLEY
- কুয়াকাটা | KUAKATA
- জাফলং | JAFLONG
- সেন্ট মার্টিন দ্বীপ | St. Martin's Island
- শ্রীমঙ্গল | SREEMANGAL
- টাঙ্গুয়ার হাওর | TANGUAR HAOR
- বান্দরবান | BANDARBAN
- সীতাকুন্ড | SITAKUNDA
- বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানগুলো হলো
- বাংলাদেশের সেরা পর্যটন স্পটগুলোর ছবি