Androgynous Fashion Story অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশন x bfa x fxyz

অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশন, যেখানে লিঙ্গ বলে কিছু নেই!

এখানে “মেয়েদের” বা “ছেলেদের” পোশাক নেই। আছে শুধু “আমার” পোশাক।

অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশন

Androgynous
Fashion

একটা সময় ছিল, যখন ফ্যাশন মানেই ছিল লুঙ্গি-ধুতি-পাঞ্জাবি আর শাড়ি কিংবা কামিজ চুড়িদার। গ্রামে গেলে লুঙ্গি আর শহরে গেলে জিন্স। তবে এখনকার ফ্যাশনের গল্পটা একটু আলাদা। “এখন” বলতে, বিশেষ করে আর্কা ফ্যাশন উইকের পরে, যেখানে জেনজিরা এমন কিছু করে দেখিয়েছে যে আমরা প্রাক্তন জেনারেশন বেশ নস্টালজিক হয়ে আছি।

ফ্যাশন উইক থেকে ফিরে এসে আমি একটা বিষয় নিয়ে চিন্তিত – আজকাল পোশাক কি সত্যিই “মেয়েদের” বা “ছেলেদের” বলে আলাদা করা যায়? আর্কা ফ্লাশ রানওয়েতে যখন মডেলরা হেঁটে আসছিল, তাদের ঢিলেঢালা ট্রাউজার, ওভারসাইজ ব্লেজার আর মিনিমালিস্ট অ্যাকসেসরিজ দেখে প্রথমেই মনে হলো, “ও মা! এ তো পুরো অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশনের চলমান বিজ্ঞাপন!” তবে অবাক করা বিষয় – কেউই বিষয়টা নিয়ে জাজমেন্টাল ছিল না। বরং সবাই প্রশংসা করছিল, “এটা বেশ সাহসী স্টাইলিং!”

অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশন আসলে মুক্ত চিন্তার প্রতীক—যেখানে স্টাইলের জন্য লিঙ্গ কোনো বাধা নয়। এটি ব্যক্তি স্বাধীনতার একটি জোরালো উদাহরণ।

অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশন কী?

.

আচ্ছা, অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশন কী? ভাবছেন, এটা কি এমন কিছু – যা নারীরা পুরুষদের পোশাক পরবে বা পুরুষেরা নারীদের পোশাক? না, মোটেও না। এটা আসলে এমন একটা স্টাইল যা কোনো লিঙ্গের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ১৯২০-এর দশকে যখন নারীরা স্যুট আর ট্রাউজার পরতে শুরু করল, তখন থেকেই এর যাত্রা। আর ৬০-এর দশকে ডেভিড বোই আর টুইগি মিলে এটাকে ফ্যাশনের শীর্ষে নিয়ে গেল। এখন, ২০২০-এর দশকে এসে, গুচি বা প্রাডার মতো ব্র্যান্ডগুলোও তাদের কালেকশনে অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশনকে গুরুত্ব দিচ্ছে।

আর্কা ফ্যাশন উইক ২০২৫

.

আর এই বছর আর্কা ফ্যাশন উইক ২০২৫ তো সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে। আলোকি স্টুডিওতে বসে ভাবছিলাম, এত দর্শকের মধ্যে একটা ব্যাপার কমন – কারও পোশাক নিয়ে কেউ কোনও নেগেটিভ মন্তব্য করছে না। সবাই পোশাককে দেখছে এক ধরনের মুক্ত চিন্তার প্রতীক হিসেবে। একজন তার বাবার ঢ়িলেঢ়ালা শার্ট তার উপরে ফো লেদারের কালো ব্লেজার আর ক্রস চোকার। তাদের মধ্যে কেউ লেপার্ড প্রিন্ট টপ আর ডেনিমের মিনি স্কার্ট । কেউ পোলো শার্ট , ব্লেজার , টাই আর ওয়াইড লেগ ডেনিম লুক দিয়ে এসেছে। সবাই তাদের স্টেটমেন্ট দেখে এমনভাবে হাততালি দিল যেন তারা কোনো সুপারহিরো! বুজাইযাচ্ছে তারা সবাই নিজস্ব ব্যক্তিত্বকে পোশাকের মাধ্যমে তুলে ধরেছে।

Androgynous Fashion Story অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশন x bfa x fxyz

এটি ফ্যাশনের সেই ধারা, যা ব্যক্তিত্বের ওপর জোর দেয়, লিঙ্গের ওপর নয়।

তাহলে, ফ্যাশনের ভবিষ্যৎ কোথায়? উত্তরটা সহজ। ফ্যাশন এখন লিঙ্গের ধারায় বাঁধা নেই। বিশ্বব্যাপী লিঙ্গনিরপেক্ষতা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কারণে অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশন শুধু একটি ট্রেন্ড নয়, বরং এটি ভবিষ্যতের ফ্যাশনের অন্যতম মূলধারা হয়ে উঠবে। এটি কেবল পোশাকেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি এবং সামাজিক কাঠামোতেও পরিবর্তন আনবে।

আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হচ্ছে, এবং অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশন তার প্রতীক। তাই পরের বার কোনো ঢিলেঢালা শার্ট দেখলে আর দ্বিধা করবেন না। কিনুন, পরুন, আর নিজেকে বলুন – ফ্যাশন মানে শুধু স্টাইল নয়, এটা আমার পরিচয়ের গল্প।

অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশনের বৈশিষ্ট্য

লিঙ্গ নিরপেক্ষ ডিজাইন:

স্যুট, ওভারসাইজ ব্লেজার, ট্রাউজার, শার্ট—যা কোনো নির্দিষ্ট লিঙ্গকে লক্ষ্য করে তৈরি নয়। পোশাকে সাধারণত হালকা, নিরপেক্ষ রং (যেমন সাদা, কালো, ধূসর, বেইজ) বেশি ব্যবহৃত হয়।

আনস্ট্রাকচার্ড সিলুয়েট:

শরীরের নির্দিষ্ট অংশ হাইলাইট না করে একটি ঢিলেঢালা ফিট তৈরি করা হয়।
ওভারসাইজ পোশাক ও আনস্ট্রাকচার্ড কাট অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

উপকরণের স্বাধীনতা:

কটন, ডেনিম, খাদি, সিল্ক—সব ধরনের উপকরণ ব্যবহার হয়, তবে এর ডিজাইন থাকে নিরপেক্ষ।

অ্যাকসেসরিজের ভূমিকা:

টুপি, স্টাডেড বেল্ট, বুট, স্নিকার্স বা ইউনিসেক্স ব্যাগের ব্যবহার এখানে বেশি দেখা যায়।

আনস্ট্রাকচার্ড সিলুয়েট:

শরীরের নির্দিষ্ট অংশ হাইলাইট না করে একটি ঢিলেঢালা ফিট তৈরি করা হয়।
ওভারসাইজ পোশাক ও আনস্ট্রাকচার্ড কাট অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

Androgynous Fashion Story অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশন x bfa x fxyz



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Your share and comment are an inspiration to us

X (Twitter)
Post on X
Pinterest
fb-share-icon
Instagram
FbMessenger
Copy link
URL has been copied successfully!