Rajshahi silk
রাজশাহী সিল্ক
রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী সিল্ক কারখানা
দীর্ঘ বিরতির পর রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী সিল্ক কারখানাটি ২০১৮ সালে পুনরায় চালু করা হয়। তবে বর্তমানে এই কারখানা সীমিত পরিসরে উৎপাদন করছে – যেখানে বন্ধ হওয়ার আগে ৬৩টি লুমে বছরে ১,১৬,০০০ গজ রেশম কাপড় তৈরি হতো, সেখানে এখন মাত্র ২০টি লুম চালু রয়েছে এবং বছরে প্রায় ৬,০০০ গজ কাপড় উৎপাদন হয়। অনেক অভিজ্ঞ কারিগর ও শ্রমিক কর্মসংস্থানের অভাবে অন্য পেশায় চলে গিয়েছিলেন, যদিও পুরোনো অনেক কারিগররা কারখানা ফের চালু হওয়ার পর স্বল্প মজুরিতে হলেও কাজে ফিরে এসেছেন। রাজশাহীতে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত খাঁটি হাত-বোনা সিল্ক কাপড় বিক্রি করা হয়, তবে প্রচারের অভাবে সেখানে ক্রেতা তুলনামূলক কম আসে। এর বিপরীতে রাজশাহীর বিসিক শিল্পনগরীর সপুরা সিল্ক মিলসের শোরুমে সারাবছর ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যায়, যেখানে স্থানীয়দের পাশাপাশি দূরদূরান্তের ক্রেতারাও রাজশাহীর প্রসিদ্ধ সিল্কের পণ্য কিনতে আসেন। আসলে রাজশাহী এসে সিল্ক না কিনলে ভ্রমণই সম্পূর্ণ হয় না – এক কথায় “রাজশাহী এসে সিল্ক না নিলে বেড়ানোই সার্থক হয় না”, এমনটাই অভিমত অনেক ভ্রমণপ্রেমীর।
অপার সম্ভাবনা
তবে আজকের দিনে রাজশাহী সিল্ক শিল্পকে টিকিয়ে রাখার পথে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বর্তমানে “রাজশাহী সিল্ক” নামে বাজারে যে সব শাড়ি-বস্ত্র বিক্রি হয় তার বড় অংশেরই সূতা আসে বিদেশ থেকে। সস্তা আমদানি করা সুতা ব্যবহারের ফলে আসল দেশীয় রেশমচাষ মার খেয়েছে এবং ঘরে তৈরি খাঁটি রেশম সূতার অভাব দেখা দিয়েছে। দেশে বছরে প্রায় ৪০০-৪৫০ টন সিল্ক সূতার চাহিদা থাকলেও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয় মাত্র প্রায় ৪০ টন। চীন যেখানে বছরে ৯ বার এবং ভারত ৬ বার রেশমগুটি থেকে সূতা আহরণ করতে সক্ষম, বাংলাদেশে আবহাওয়াগত কারণে এখনো বছরে মাত্র ৪ বার (তার মধ্যে দুইবার ফলন ভালো হয়) সূতা উৎপাদন করা যায়। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এম. মনজুর হোসেনের নেতৃত্বে একদল গবেষক প্রমাণ করেছেন যে সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করলে বছরে ৩০ বার পর্যন্ত রেশমগুটি থেকে সুতা আহরণ করা সম্ভব। দেশের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত সূতা রপ্তানির সম্ভাবনাও রয়েছে, কিন্তু উদ্যোগের অভাবে সেই গবেষণা-ভিত্তিক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ঝুলে রয়েছে – অর্থাৎ রেশমের অপার সম্ভাবনাটি এখনো পূর্ণভাবে কাজে লাগানো হয়নি। রেশমচাষীদের অনেকেই এখনো তুঁত চাষকে প্রধান আয়ের হিসেবে গ্রহণ করতে দ্বিধা করেন, কারণ অন্যান্য কৃষিপণ্য থেকে তারা দ্রুত ও বেশি আয় নিশ্চিত করতে পারেন
সূত্র: এই নিবন্ধের তথ্যাবলী বিভিন্ন গবেষণা প্রবন্ধ, পত্রিকা প্রতিবেদন ও বিশ্বকোষ থেকে সংগৃহীত এবং যাচাই করা হয়েছে। বিশেষত উইকিপিডিয়া, প্রথম আলো, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড প্রভৃতি উৎস থেকে ঐতিহাসিক তথ্য ও পরিসংখ্যান নিয়ে এখানে উপস্থাপন করা হয়েছে bn.wikipedia.org prothomalo.com। Rajshahi Silk শিল্পের সমৃদ্ধ অতীত ও বর্তমান চিত্র তুলে ধরতে এই উৎসগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সংশ্লিষ্ট অংশগুলো উদ্ধৃত করা হয়েছে। রাজশাহী সিল্কের গল্প আমাদের ঐতিহ্যের সাথে জড়িয়ে আছে, এবং এই নিবন্ধে সেই গল্পেরই একটি সারবস্তু উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে।


বাংলাদেশের লোকশিল্প ও কারুশিল্প: এক নজরে
fayze hassan
লালনের ছেউড়িয়া থেকে গ্রামবাংলার মেলা—বাংলাদেশের একতারা শিল্প
fayze hassan
পাটশিল্পের পুনর্জাগরণ: গ্রামীণ কারুশিল্প থেকে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং
fayze hassan
বাংলাদেশের পাটশিল্প: ঐতিহ্য, বর্তমান অবস্থা ও সোনালি আঁশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
bdfashion archive
রাজশাহী সিল্ক: প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে আসা ঐতিহ্য
fayze hassan








