প্রকৃতি থেকে শিল্পে
ছন এবং তালপাতা—প্রকৃতির দুই আশীর্বাদ। ছন ও তালপাতার ঝুড়ি তৈরির প্রধান উপকরণ হলো তালগাছের পাতা এবং মাঠের ছন। তালগাছ থেকে সংগ্রহ করা পাতাগুলো শুকিয়ে নিয়ে তা দিয়ে তৈরি করা হয় নানা ধরনের ঝুড়ি, ডালা, পাখা এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। ছন, যা সাধারণত জলাভূমি বা মাঠে পাওয়া যায়, তা দিয়ে তৈরি করা হয় মজবুত ও টেকসই ঝুড়ি। এই শিল্পকর্মে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের নিবিড় সম্পর্ক ফুটে উঠে।
তালপাতার ঝুড়ি বানানোর জন্য প্রথমে তালপাতা সংগ্রহ করতে হতো। তালপাতা রোদে শুকিয়ে মজবুত করার পর তা বিশেষ পদ্ধতিতে কেটে ঝুড়ি তৈরির উপযোগী করে তোলা হতো। এরপর সুতার মতো পাতলা করে কাটা পাতা দিয়ে ঝুড়ির কাঠামো বোনা হতো। আর ছন দিয়ে তৈরি ঝুড়ি হতো তুলনামূলক শক্তপোক্ত। এগুলো মূলত ধান, গম বা অন্যান্য শস্য মজুদ করার কাজে ব্যবহৃত হতো।
শিল্পের পেছনের মানুষ
এই শিল্পের মূল কারিগর হলেন গ্রামের নারীরা। তারা তাদের সাংসারিক কাজের ফাঁকে ছন ও তালপাতা দিয়ে ঝুড়ি বুনেন। এটি তাদের জন্য আয়ের একটি অন্যতম উৎস। অনেক নারী এই কাজটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে শিখে আসছেন। তাদের হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় সাধারণ তালপাতা ও ছন রূপ নেয় সুন্দর ও কার্যকরী শিল্পকর্মে।
ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার মেলবন্ধন
সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই শিল্পেও এসেছে নতুনত্ব। এখন শুধু সাধারণ ঝুড়ি নয়, রঙ-তুলির ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের ডিজাইন। গ্রামীণ জীবনের চিত্র, ফুলের নকশা বা জ্যামিতিক প্যাটার্ন দিয়ে সাজানো হয় ঝুড়িগুলো। এগুলো শুধু গ্রামেই নয়, শহরের বিভিন্ন মেলায় এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও বিক্রি হচ্ছে। তাই যদি কখনো গ্রামের পথে চলতে চলতে কোনো তালপাতার ঝুড়ি চোখে পড়ে, একটু থেমে দেখবেন। হয়তো সেই ঝুড়ি আপনাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে কোনো এক শৈশবের গ্রামবাংলার উঠোনে, যেখানে ছন আর তালপাতার ঝুড়ি শুধু পণ্য নয়, স্মৃতির ভাণ্ডার।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্থানীয় ও জাতীয় উদ্যোগের ফলে এই শিল্পে কিছুটা পুনর্জাগরণ ঘটেছে। বিভিন্ন সংগঠন নারীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এবং তাদের তৈরি পণ্য বাজারজাত করার ব্যবস্থা করছে। পাশাপাশি, পরিবেশবান্ধব পণ্যের চাহিদা বাড়ায় তালপাতার ঝুড়ি ও ডালা আবার জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
আপনার একটি শেয়ার এবং মন্তব্য আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা ❤️

লালনের ছেউড়িয়া থেকে গ্রামবাংলার মেলা—বাংলাদেশের একতারা শিল্প
fayze hassan
পাটশিল্পের পুনর্জাগরণ: গ্রামীণ কারুশিল্প থেকে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং
fayze hassan
বাংলাদেশের পাটশিল্প: ঐতিহ্য, বর্তমান অবস্থা ও সোনালি আঁশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
bdfashion archive
রাজশাহী সিল্ক: প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে আসা ঐতিহ্য
fayze hassan
কোমর তাঁত: পার্বত্য অঞ্চলের গাঁথা ইতিহাস ও সংস্কৃতি
fayze hassan
এক সম্ভাবনাময় শিল্পের নাম—ঝিনুক শিল্প
fayze hassanআমাদের সোশ্যাল মিডিয়া লিংক
আরও পড়ুন -
-
লালনের ছেউড়িয়া থেকে গ্রামবাংলার মেলা—বাংলাদেশের একতারা শিল্প
-
পাটশিল্পের পুনর্জাগরণ: গ্রামীণ কারুশিল্প থেকে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং
-
বাংলাদেশের পাটশিল্প: ঐতিহ্য, বর্তমান অবস্থা ও সোনালি আঁশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
-
রাজশাহী সিল্ক: প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে আসা ঐতিহ্য
-
কোমর তাঁত: পার্বত্য অঞ্চলের গাঁথা ইতিহাস ও সংস্কৃতি