Saree of Bangladesh - The Bearer of Tradition বাংলাদেশি সেরা দশ শাড়ি x bfa x fxyz

Saree of Bangladesh | The Bearer of Tradition .

 বাংলাদেশি সেরা দশ শাড়ি

দেশিয় সংস্কৃতির এক অনন্য অনুষঙ্গ হলো শাড়ি। যা বাংলাদেশের ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক । একেকটি শাড়ি যেন একেকটি ভালোবাসার গল্প ।

Saree of Bangladesh

শাড়ির গল্প

বাঙালি নারীর কাছে শাড়ি শুধুমাত্র পোশাকই নয়। একেকটি শাড়ি যেন তাদের কাছে একেকটি ভালোবাসার গল্প। কোনটি হয়তো সদ্য কৈশোরে পা রাখা মেয়ের আবদার পূরণে, মায়ের কিনে দেয়া শাড়ি। আবার কোন শাড়িতে হয়তো জড়িয়ে আছে বিয়েতে পাওয়া প্রথম উপহারের আবেগ। কিংবা প্রিয় মানুষের সাথে প্রথম দেখা করতে যাওয়ার স্মৃতি। এসব গল্পগুলো বাংলাদেশের পোশাক সংস্কৃতিটিকে এত বর্ণিল করে তুলেছে। 

এইসব ছোট ছোট গল্প নিয়েই শাড়ি হয়ে উঠেছে বাঙালির সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ—
একটি কাপড় নয়, বরং আবেগ, আত্মপরিচয়, আর ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে শাড়ির আছে আলাদা পরিচিতি—বুননের ধরণ, নকশা, রঙ আর কাহিনি। এই বৈচিত্র্য শুধু নারীদের আলমারিকে নয়, দেশের সংস্কৃতিকে করেছে বর্ণময়। বলা হয়ে থাকে, উপমহাদেশে শাড়ির প্রচলন আজ থেকে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার বছরের পুরোনো। তবে বাংলাদেশে শাড়ি যেন এক নতুন জীবন পেয়েছে প্রতিটি অঞ্চলের হাতে। এখানকার তাঁতিরা শুধু সুতো বোনেন না—তারা ইতিহাস বোনেন, স্মৃতি বোনেন, সংস্কৃতি বোনেন।

আজকের আয়োজনে আমরা জানবো, বাংলাদেশের কোন কোন অঞ্চলের কোন কোন শাড়ি আমাদের ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে, কোন শাড়ি কীভাবে এসেছে, কাদের হাতে তৈরি হয়, আর কেমন করে তা হয়ে উঠেছে সেরা দশের অংশ। এটাই হবে এক ধরনের ভ্রমণ—শাড়ির রঙে রঙে সাজানো এক দেশজ ঐতিহ্যের মানচিত্রে।

SAREE MAP OF BANGLADESH

মানচিত্রে বাংলাদেশেল ঐতিহ্যবাহী শাড়ি

saree map of Bangladesh-bfa X fxyz-2022

আপনার একটি শেয়ার এবং মন্তব্য আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা ❤️


history of saree

শাড়ির ইতিহাস:
এক ফালি কাপড় থেকে নারীর আত্মপরিচয়

ষাটের দশকের কবি আবুল হাসানের কবিতায় কবি বলেছেন –

তুমি তো নও আম্রপালী,
বর্তমানের নারী,
তোমার লাগে লিনোলিয়াম,
সিফনঘেরা শাড়ি।”

শাড়ি—শুধু বস্ত্র নয়, এ যেন বাংলার নারীর আত্মপরিচয়ের অনন্ত এক ধারা। কবি আবুল হাসানের কবিতার মতো, সময় বদলেছে, কাপড়ের ধরন বদলেছে, তবু শাড়ির আবেদন আজও অটুট।

প্রাচীন ভারতে শাড়ি বলতে বোঝাত একখণ্ড অখণ্ড বস্ত্র, যার পুরুষ সংস্করণ ছিল ধুতি। ঐতিহাসিকদের মতে, ‘শাড়ি’ শব্দটির উৎস সংস্কৃত “শাটিকা” বা “সতীকা” থেকে, যার অর্থ “এক ফালি কাপড়”। কেউ কেউ মনে করেন, এটি অনার্য ভাষার ‘শাঢী’ শব্দ থেকে এসেছে। আর্য-অনার্য উভয় সভ্যতাতেই এই ধরনের বস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়। সিন্ধু ও মেহেরগড় সভ্যতার ধ্বংসাবশেষে পাওয়া চিত্রে দেখা যায়, নারী-পুরুষ উভয়েই এই ধরনের অখণ্ড কাপড় পরিধান করতেন।

ঐতিহাসিক নীহাররঞ্জন রায়ের মতে, প্রাচীন দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে সেলাই করা কাপড় পরার প্রচলন ছিল না। সেলাইয়ের ধারণা আসার আগ পর্যন্ত পুরুষেরা ধুতি আর নারীরা শাড়ি পরতেন। সেলাই প্রযুক্তি আসার পর কাপড় রূপান্তরিত হতে থাকে নানা আঙ্গিকে—ঘাগরা, সালোয়ার, কামিজ, কুর্তা ইত্যাদি রূপে। কিন্তু কিছু অঞ্চলে সেলাইবিহীন শাড়ির প্রচলন থেকে যায় ঠিক আগের মতোই। এই অঞ্চলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা, উড়িষ্যা, মহারাষ্ট্র, আসাম, গুজরাট, পাঞ্জাব ও তামিলনাড়ুর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

শাড়ি পরার রীতি: আটপৌরে থেকে কুচি পর্যন্ত

এক সময় শাড়ি পরার প্রধানত দুটি পদ্ধতি ছিল—আটপৌরে (এক প্যাঁচে পরা) এবং পোশাকি। আটপৌরে পদ্ধতিতে সাধারণত গ্রামবাংলার নারীরা শাড়ি পরতেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরার ধরনে আসে কুচি দেওয়া শৈলী, যাকে আমরা আজকের দিনে সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি হিসেবে দেখি। এই পরিবর্তনের পেছনে ছিলেন ঠাকুরবাড়ির বধূ জ্ঞানদানন্দিনী দেবী, যিনি পার্সি মহিলাদের দেখে শাড়িতে কুঁচি যোগ করে তা ব্লাউজ ও পেটিকোটের সঙ্গে পরার রীতি চালু করেন। আজকের আধুনিক শাড়ি পরার রীতি মূলত তার হাত ধরেই এসেছে। শুধু কুচি নয়, শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজ ও পেটিকোট পরার ধরণও তার মাধ্যমেই জনপ্রিয়তা পায়।

তবে আটপৌরে ধরণ একেবারে হারিয়ে যায়নি। বাংলার গ্রামাঞ্চলে আজও প্রবীণ নারীরা এই পদ্ধতিতে শাড়ি পরেন। আর শহরের তরুণীরাও উৎসব-অনুষ্ঠানে যেমন পহেলা বৈশাখ, দুর্গাপূজা বা গায়েহলুদের অনুষ্ঠানে ঐতিহ্য ধরে রাখতে এই শৈলীতে শাড়ি পরতে ভালোবাসেন।

Jamdani জামদানি x bfa x fxyz

JAMDANI
জামদানি

বলা হয় প্রাচীনকালের মসলিন কাপড়ের উত্তরাধিকারী হলো আজকের জামদানি শাড়ি।

তাইতো জামদানি কে স্রেফ কাপড় / শাড়ি বা পণ্য ভাবলে ভুল হবে। জামদানি হচ্ছে বিশেষ ভূগোল ও পরিবেশে শিল্প চর্চার একটি বিশেষ ধরণ, যার মাধ্যমে একজন তাঁতি  সুতা , রং , মাকু এবং তাঁত এর মাধ্যমে এক একটি শিল্প তৈরী করে।

জামদানি সম্পর্কে বিস্তারিত
আলাদা আলাদা করে বর্ণনা দেয়া আছে। বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন লিংকে –

tangail tat saree x bfa x fxyz social media (4)

TANGAIL SAREE
টাঙ্গাইল তাঁতের শাড়ি 

তাঁতশিল্প বাংলাদেশের অন্যতম পুরোনো কুটিরশিল্প। টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি তারই ঐতিহ্য বহন করে। টাঙ্গাইলের দক্ষ কারিগররা তাদের বংশ পরম্পরায় তৈরি করছেন এ শাড়ি। তাই জেলার নামেই এর নামকরণ করা হয়েছে। “ টাঙ্গাইল তাঁতের শাড়ি “। 

খেশ শাড়ি :
পুরোনো কাপড়ের নতুন জীবন

খেশ শাড়ির বিশেষত্ব হলো—পুরোনো কাপড়ের পুনর্ব্যবহার করে এক নতুন জীবন দান। এর মূল উপাদানই হচ্ছে পুরোনো সুতির কাপড়। সেই কাপড় ছিঁড়ে ছিঁড়ে বানানো হয় চিকন চিকন দরির মতো ফালি, যা পরে শাড়ির ভরনায় ব্যবহৃত হয়। একেকটি পুরোনো কাপড় থেকে পাওয়া যায় প্রায় ৮০ থেকে ৮৫টি “লাচ্চি” সুতা। এই লাচ্চি গুলোকে রঙে ডুবিয়ে শুকানো হয়, তারপর চরকায় ফেলে তৈরি করা হয় কাপড়ের ফালি। আর সেই ফালি দিয়েই তাঁতের সাহায্যে গড়ে ওঠে খেশ শাড়ি।


উৎপত্তি ও ইতিহাস

খেশ শাড়ির উৎপত্তি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায়। এই শাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে আছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামও। স্থানীয় তাঁতিদের বর্ণনায় জানা যায়—তাদের পূর্বপুরুষদের হাতেখড়ি হয়েছিল শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে শিল্পচর্চার অংশ হিসেবে পুরোনো কাপড় নতুনভাবে ব্যবহার করে শাড়ি বানানোর কৌশল শেখানো হয়েছিল।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজেও পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন ও পুনর্ব্যবহারের পক্ষে ছিলেন। শান্তিনিকেতনের শিল্পীরা তাঁর অনুপ্রেরণায় কাঁথা সেলাইয়ের কায়দা থেকে ধারণা নিয়ে পুরোনো কাপড়ের টুকরো দিয়ে শাড়ি তৈরির পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন। সেখান থেকেই জন্ম নেয় খেশ শাড়ি—যেখানে একদিকে আছে পুনর্ব্যবহার, অন্যদিকে নান্দনিক শৈল্পিকতা।

খেশ শাড়ি কেবল পুরোনো কাপড়ের পুনর্ব্যবহার নয়; এটি আসলে এক নতুন জীবন দান। একসময় ব্যবহার শেষে অপ্রয়োজনীয় হয়ে যাওয়া কাপড়ই তাঁতির হাতে নতুন রূপে ফিরে আসে, হয়ে ওঠে নতুন এক শাড়ি।
এই শিল্পকলা তাই পরিবেশবান্ধব ফ্যাশনেরও এক চমৎকার উদাহরণ।
খেশ শাড়ি বাংলার বয়নশিল্পে এক অভিনব অধ্যায় যুক্ত করেছে। এর প্রতিটি সুতো, প্রতিটি রঙিন ফালি যেন বলে—কোনো কিছুই পুরোপুরি শেষ হয়ে যায় না, নতুন আকারে, নতুন রূপে আবার ফিরেও আসতে পারে।

pabna saree পাবনার শাড়ি saree of bangladesh x bfa x fxyz

Pabnai Saree
পাবনাই শাড়ি

পাবনার মাটির গন্ধ কি কোনো দিন পেয়েছেন? এমন মাটি, যা একসঙ্গে গল্প বলে আর বুননের সুর তোলে। পাবনার শাড়ি ঠিক তেমনই—গল্প আর সুরের এক মায়াবী মিশেল। এই শাড়ি শুধু একটি পোশাক নয়, এটি একটি ঐতিহ্যের ধারক, প্রজন্মের গল্পের বাহক। ছোটবেলায় হয়তো দাদীর কথায় শুনেছেন, “তোর দাদা ভাই এই শাড়িটা পাবনা থেকে এনেদিয়েছিল।” সেই শাড়ির ভাঁজে কি একটুও কৌতূহল জাগেনি? কেন এই শাড়ি এতটা স্পেশাল? চলুন, এবার সেই কৌতূহলের উত্তর খুঁজি পাবনার তাঁতের গল্পের মাঝে। আর বলে যাই, “কন্যা, কইরো নাগো মন ভারি, পাবনা থেইক্যা আইনা দিমু শাড়ি” —এই আস্থার সঙ্গে পাবনার তাঁতশিল্প এগিয়ে চলেছে নতুন সম্ভাবনার পথে।

Narshaidi Mala Saree

নরসিংদী মালা শাড়ি

নরসিংদী জেলার মালা শাড়ির নাম আমি এবছরই প্রথম জেনেছি। অনেক আগের থেকেই জনপ্রিয় শাড়ি এটা। জ্যাকার্ড শাড়িও বলা হয়ে থাকে । জ্যাকব মেশিনে তৈরী হয় এই শাড়ি।

১৯৬৮ সালের দিকে অ্যানওয়ার সিল্ক মিলস/ anwar silk mills ltd বাজারে মালা শাড়ি নিয়ে আসে, যেটি সঙ্গতিপূর্ণভাবে তখনকার স্থানীয় বিবাহ-প্রথায় অপরিহার্য হয়ে উঠে। ১৯৬৮ থেকে প্রায় ১৯৮০-এর মধ্য পর্যন্ত এটি এত জনপ্রিয় হয় যে প্রচলিত ডাইকাইয়া বাংলা বাক্য হয়ে ওঠে — “মালা শাড়ি না দিলে বিয়া বোমু না” (মালা শাড়ি না দিলে বিয়ে হবে না)

ডিজাইন ও গঠন

মালা শাড়ি সাধারণত নির্মিত হত নাইলন কাপড়ে, যার উপর ব্যবহৃত হত জাঁকজমকপূর্ণ রোলেক্স জরি (ঝকঝকে সোনার বা রূপার ) কাজ। শাড়িগুলোর রঙ ছিল বেশ প্রাণবন্ত এবং উৎসবমুখর — লাল, গোলাপী, বেগুনি, নীল প্রভৃতি।
এই শাড়ির মুখ্য আকর্ষণ ছিল সোনালী বা রৌপ্যসজ্জিত ফুল এবং মীনা ওয়ার্ক – যা দূর থেকেও চোখে পড়ত।

এক সময় মনকি গ্রামাঞ্চলেও বিয়ে অনুষ্ঠানে মালা শাড়ি ছাড়া অনুষ্ঠান অসম্পূর্ণ মনে হতো এবং প্রতিটি রেলস্টেশনে বড় রকমের বিলবোর্ডে এ শাড়ির বিজ্ঞাপন দেখা যেত।

মনিপুরী শাড়ি Manipuri Saree x fxyz x bfa (44)=
MANIPURI SAREE

মণিপুরী শাড়ি

জামদানিবেনারসিটাঙ্গাইলপাবনা, রাজশাহীসহ অন্য দেশীয় 
 তাঁতের শাড়িগুলোর
 প্রতিটির আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে, যা দেখলেই বোঝা যায় এটি কোন তাঁতের শাড়ি।
ঠিক তেমনি মণিপুরী শাড়ির রং আর নকশা চোখে পড়লেই মনে হয়, এ তো মণিপুরী! কারণ এই শাড়ির আসল চেনা যায় এর নকশায়—মাইরাং বা মন্দিরের প্রতিকৃতি। সব শাড়ির আঁচল, জমিন আর পাড়ের গাঠনিক বৈশিষ্ট্য প্রায় একইরকম। আরেকটা জিনিস চোখে পড়ে, এর উজ্জ্বল রং। পাড়ের কথা বলতে গেলে, অন্য শাড়ির পাড় নানা রকম নকশা থাকলেও মণিপুরী শাড়ির পাড় সাধারণত একরঙা যা এক থেকে দুই ইঞ্চি চওড়া হয়ে থাকে। মজার ব্যাপার হলো, পাড়ের রংটা জমিনের রঙের থেকে অনেক বেশি কন্ট্রাস্ট এবং ভাইব্রেন্ট হয়ে থাকে, যা সহজেই চোখে একটা তফাত ধরা পড়ে।

Mirpur Benarasi sharee x bfa x fxyz - Copy
Mirpur Benarasi Saree

বেনারসি শাড়ি

বেনারসি শাড়ি -র উৎপত্তিস্থল হিসেবে ভারতের ঐতিহাসিক বেনারস শহরের নামই বেশি শোনা যায়। তবে ঠিক কবে থেকে এই শিল্পের সূচনা হয়েছিল, তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি। একটি গল্প থেকে জানা যায় যে, বেনারসের তাঁতীদের পূর্বপুরুষরা ছিলেন আনসারী সম্প্রদায়ের লোক। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যখন মক্কা থেকে মদীনায় আশ্রয় নেন, তখন এই আনসারী সম্প্রদায়ই তাকে সাদরে গ্রহণ করে। পরবর্তীতে তারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এর প্রচারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মনে করা হয়, বেনারস শহরের বেশিরভাগ তাঁতীই সেই আনসার সম্প্রদায়ের বংশধর।

Rajshahi silk Sericulture রাজশাহী সিল্ক রেশমকীট তুঁত চাষ x bfa x fxyz

Rajshahi silk
রাজশাহী সিল্ক

রাজশাহী সিল্ক: প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে আসা ঐতিহ্য

মসলিন ও জামদানির মতোই রাজশাহী রেশম বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও গর্বের প্রতীক। রাজশাহী শহর ঐতিহাসিকভাবেই রেশম উৎপাদনের কেন্দ্র, যার জন্য শহরটি “Silk City” বা রেশম নগরী নামেও খ্যাত। তথ্যঅনুযায়ী আজ থেকে ৩০০ বছর আগে থেকেই ‘রাজশাহী সিল্ক’ নামেই এই সিল্ক কাপড় বিদেশে রপ্তানি হতো। যার জন্য রাজশাহী জেলার ব্রান্ডিং -এ শুরুতেই চলে আসে রাজশাহী সিল্কের নাম। রাজশাহী সিল্কের খ্যাতি এবং নিজস্বতা এতটাই যে ২০২১ সালে রাজশাহী সিল্ক ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে।


আপনার একটি শেয়ার এবং মন্তব্য আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা ❤️


পাটের শাড়ি _ AI generate_ model picture source form Bishworang - বিশ্বরঙ web
পাটের শাড়ি _ai generated image_ model picture source from Bishworang – বিশ্বরঙ-bfa x fxyz

পাটের শাড়ি:
ঐতিহ্য, ফ্যাশন ও সম্ভাবনা

দেশের লোকগীতির কবিতায় পাটের শাড়ির কথা উল্লেখ থাকলেও এই আধুনীকতার জোয়ারে কেন জানি নতুন করে শুনতে হচ্ছে পাটের শাড়ি।

পাটের আঁশ দিয়ে বোনা রঙিন শাড়ি বাংলাদেশের ঐতিহ্য এবং সাসটেইনেবল ফ্যাশনের সাথে যুক্ত করছে। পাটকে বাংলাদেশের “সোনালী আঁশ” বলা হয়, যা একসময় দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য ও অর্থনীতির চালিকা শক্তি ছিল। ঐতিহাসিকভাবে বাংলার তাঁতিরা কাপড় বুনতে পাটআশঁ ব্যবহার করতেন। বাংলা সাহিত্যেও পাটের শাড়ির উল্লেখ পাওয়া যায় – কবি আহসান হাবীবের শিশুতোষ কবিতা ‘ইচ্ছা’তে ভাই তার বোনের জন্য পাটে বোনা শাড়ি কিনবে বলে আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছে। অর্থাৎ পাটের শাড়ি বাঙালি সংস্কৃতির স্মৃতিতে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।

বাংলাদেশের বিশেষ কিছু অঞ্চলে পাটের শাড়ি বুননের ঐতিহ্য গড়ে উঠেছিল। তার মধ্যে টাঙ্গাইলের হাতেবোনা তাঁতশিল্প বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। একসময় টাঙ্গাইলের তাঁতের বিখ্যাত শাড়ির একটি ধরন হিসেবে পাটের শাড়ি ব্যাপক কদর অর্জন করেছিল, তবে কালের প্রবাহে তা প্রায় হারিয়েই গিয়েছিল। সম্প্রতি স্থানীয় উদ্যোক্তাদের চেষ্টায় এই বিলুপ্তপ্রায় পাটবস্ত্র শিল্প নতুন জীবন পাচ্ছে। টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার তরুণী তানজিন তালুকদার তনু ঐতিহ্যবাহী পাটের শাড়িকে তাঁর উদ্যোগের সিগনেচার পণ্য হিসেবে বেছে নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেছেন। নতুন প্রজন্মের কাছে অপরিচিত হয়ে পড়া পাটের শাড়িকে পুনরায় পরিচিত করানোই তাঁর লক্ষ্য, যা এ ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে সহায়ক হবে।

Khadi Saree খাদি শাড়ি Bangladesh x bfa (2)
ছবিসূত্র : খাদি-খদ্দর

Khadi Saree

খাদি শাড়ি

ব্রিটিশ ভারতে গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলনের সময় দেশীয় বস্ত্র ব্যবহারের আন্দোলনের অংশ হিসেবেই খাদি শিল্প দ্রুত প্রসার লাভ করে। বিশেষত কুমিল্লা জেলায় এ শিল্পের ব্যাপক সাড়া পড়ে। রাঙ্গামাটির তুলা থেকে সেসময় খাদি সুতা তৈরি হতে শুরু করে এবং কুমিল্লার চান্দিনা, দেবিদ্বার, বুড়িচং ও সদর থানায় বসবাসকারী যুগী বা দেবনাথ পরিবারেরা খাদি কাপড় বুনতে শুরু করেন। তাদের হাতেই কুমিল্লার খাদি শাড়ির ঐতিহ্য জন্ম নেয়।

খাদি শিল্প প্রসারে গান্ধীজীর আহ্বান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশি বস্ত্র বর্জনের মাধ্যমে দেশীয় বস্ত্রের চাহিদা বাড়ে এবং কুমিল্লার খাদি ধীরে ধীরে সারা দেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। গান্ধীজী প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লার অভয় আশ্রমও তখন খাদি শিল্পের প্রসারে বড় অবদান রাখে।
খাদি শাড়ির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, এটি হাতে কাটা সুতা দিয়ে বোনা হয়। ফলে এর সুতা তুলনামূলকভাবে মোটা হয়। সাধারণত খাদি শাড়িতে টানায় (warp)-এ ব্যবহার হয় সাধারণ কটন সুতা আর ভরনায় (weft)-এ ব্যবহার হয় খাদি সুতা। নকশার ধরন ও শৈল্পিক প্রয়োজনে এই অনুপাত কিছুটা পরিবর্তিত হয়। তবে প্রতিটি খাদি শাড়ির মধ্যেই থাকে হাতে তৈরি সুতার অদ্ভুত মোহ আর ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারের গর্ব।



তথ্যসূত্র: শাড়ি বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিবেদন ও প্রকাশনা থেকে সংগৃহীত তথ্য। বিশেষ করে bproperty.com ,bn.quora.com, songbadprokash.com এবং chatGPT


Literature in Saree শাড়িতে সাহিত্য x Manas x bfa x fxyz web

শাড়িতে সাহিত্য

শাড়িতে সাহিত্য, এই প্রবণতার পেছনের মূল কারণটা কী হতে পারে?
শুধুই সাহিত্যপ্রেম, নাকি অন্য কিছুও?

September 6, 2025
jute industry-jute handicraft of Bangladesh-পাটশিল্পের পুনর্জাগরণ-পাট কারুশিল্প- x bfa x fxyz

পাটশিল্পের পুনর্জাগরণ: গ্রামীণ কারুশিল্প থেকে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং

fayze hassan
পাটশিল্প এখন শুধু অতীতের ঐতিহ্য নয়; বরং ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির নতুন ক্যানভাস—যেখানে ঐতিহ্য, উদ্ভাবন আর টেকসই…
September 6, 2025
August 31, 2025
Jute industry of Bangladesh বাংলাদেশের পাটশিল্প x bfa x fxyz V2

বাংলাদেশের পাটশিল্প: ঐতিহ্য, বর্তমান অবস্থা ও সোনালি আঁশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

bdfashion archive
‘সোনালি আঁশের সোনার দেশ/পাট পণ্যের বাংলাদেশ’ -এ স্লোগানে ২০১৭ সালে দেশে প্রথমবারের মতো পালিত হয়…
August 31, 2025

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Instagram did not return a 200.
Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Your share and comment are an inspiration to us

X (Twitter)
Post on X
Pinterest
fb-share-icon
Instagram
FbMessenger
Copy link
URL has been copied successfully!