THE SYMBOL OF HEROISM বীরত্বসূচক খেতাব

মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রেষ্ঠত্ব ও বীরত্বের স্বীকৃতি | The Symbol of Heroism

১৯৯২ সালের ১৫ ডিসেম্বর জাতীয়ভাবে বীরত্বসূচক খেতাব প্রাপ্তদের পদক ও রিবন প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রেষ্ঠত্ব ও বীরত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন খেতাবে ভূষিত করা হয় যা বীরত্বসূচক খেতাব বলে অভিহিত। সদস্যদের বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিদান এবং তাদের মধ্যে আত্মত্যাগের প্রেরণা সৃষ্টির লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি এমএজি ওসমানী ১৯৭১ সালের মে মাসের প্রথমদিকে মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদে বীরত্বসূচক খেতাব প্রদানের প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। যা ছিলো –

(ক) সর্বোচ্চ পদ, (খ) উচ্চ পদ, (গ) প্রশংসনীয় পদ, (ঘ) বীরত্বসূচক প্রশংসাপত্র।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ সভায় বীরত্বসূচক খেতাবের নতুন নামকরণ হয়।




(ক) বীরশ্রেষ্ঠ
(খ) বীর উত্তম
(গ) বীরবিক্রম
(ঘ) বীর প্রতীক

বীরশ্রেষ্ঠ

বীরশ্রেষ্ঠ

Virshrestha

বীর শ্রেষ্ঠ বীরত্বের জন্য প্রদত্ত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক পুরস্কার । যুদ্ধক্ষেত্রে অতুলনীয় সাহস ও আত্মত্যাগের নিদর্শন স্থাপনকারী যোদ্ধার স্বীকৃতিস্বরূপ এই পদক দেয়া হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে এই পদক দেয়া হয়েছে ।

বীর উত্তম

বীর-উত্তম

heroic

 বীর-উত্তমবাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বীরত্বের পুরস্কার। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ৬৮ জনকে এই উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। সর্বশেষ বীর-উত্তম পদক পেয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ। বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৫ সালের আগস্টে বাঁচানোর চেষ্টার জন্য তাকে ২০১০ সালে মরণোত্তর বীর-উত্তম পদক প্রদান করা হয়। 

বীরবিক্রম

বীরবিক্রম 

Birvikram

বীরবিক্রম তৃতীয় সর্বোচ্চ উপাধি। মোট ১৭৫ জনকে এই উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

বীর প্রতীক

 বীর প্রতীক

Symbol of heroism

বীর প্রতীক চতুর্থ সর্বোচ্চ উপাধি। মোট ৪২৬ জনকে এই উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

THE SYMBOL OF HEROISM বীরত্বসূচক খেতাব
The Symbol of Heroism

বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রেষ্ঠত্ব ও বীরত্বের স্বীকৃতি বীরত্বসূচক খেতাব

১৯৭৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খেতাব তালিকায় স্বাক্ষর করেন। ১৫ ডিসেম্বর ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠ, ৬৮ জন বীরউত্তম, ১৭৫ জন বীরবিক্রম এবং ৪২৬ জন বীরপ্রতীক মোট ৬৭৬ জন মুক্তিযোদ্ধাকে খেতাবে ভূষিত করা হয়।

১৯৯২ সালের ১৫ ডিসেম্বর জাতীয়ভাবে বীরত্বসূচক খেতাব প্রাপ্তদের পদক ও রিবন প্রদান করা হয়। ২০০১ সালের ৭ মার্চ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থিক পুরস্কার এবং সনদপত্র প্রদান করা হয়।

খেতাবপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন দুজন নারী। এ ছাড়া পাঁচজন অবাঙালি বীরত্বসূচক খেতাব পান, যাদের মধ্যে একজন বিদেশি।



হাজী সুবেদার (অবঃ) মোঃ মাধু মিয়া বীর প্রতীক সম্পর্কে Osman Goni Jahid ফেসবুক প্রোফাইলে দেয়া পোষ্ট যেখানে তার দাদাভাইয়ের স্মৃতি চারণ করেছেন।

দাদাভাইর কিছু পদক

স্বাধীনতা উত্তর দেশের অভ্যন্তরে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন অপারেশনে বীরত্বপূর্ণ/সাহসিকতাপূর্ণ কাজের জন্য “বীর প্রতীক” খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মাধু মিয়া।
ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলাস্থ পূর্ব নিলখী গ্রামের মাধু মিয়া। পুরো নাম হাজী সুবেদার (অবঃ) মোঃ মাধু মিয়া বীর প্রতীক, পিতা- আব্দুল আজিজ (মুক্তিযুদ্ধে শহীদ)। সহোদর সানু মিয়াও ই.পি.আর থেকে পালিয়ে পিরোজপুরে যুদ্ধ করেন। মাধু মিয়া নিজ এলাকা মুক্তকারী স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরও দীর্ঘদিন তিনি সেনাবাহীনিতে দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৮৮ সালে অবসর গ্রহন করেন।

হাজী সুবেদার (অবঃ) মোঃ মাধু মিয়া বীর প্রতীক (2)

কর্মজীবনে ‘বীর প্রতীক’, ‘রণ তারকা’,’জয় পদক’,’মুক্তি তারকা’, ‘সমর পদক’, ‘সংবিধান পদক’ প্রভৃতি সম্মানে ভূষিত হন।তবে এখনো বীর প্রতীক গেজেট ভুক্ত হয়নি এই মুক্তিযোদ্ধার নাম। ফেনীর বিলোনিয়ায় অসামান্য অবদান রাখা এই মাধু মিয়া ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। বীর প্রতীক গেজেটে তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করা সময়ের দাবি।

দুর্ধর্ষ দশ সেনাসদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত এক মুক্তিযুদ্ধা টিমের নাম। যাঁরা পাক হানাদার মুক্ত করেছিলেন ফেনীর বিলোনিয়া আর পরশুরাম। মাধু মিয়া সেই টিমের একজন দুঃসাহসী মুক্তিযোদ্ধা।

১৯৫৮ সালে ১৮ বছরের মাধু মিয়া পাকিস্থানী আর্মীতে যোগ দেন।অংশ নেন ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে। ১৯৭১-এ তিনি চট্টগ্রামে সৈনিকদের প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২৫ মার্চের বর্বর হত্যাকান্ডের পর পাকিস্থান সরকারের অধীন থাকার অবকাশ ছিলনা। ছুটে চলে যান জন্মস্থান নিলখী গ্রামে। গ্রামের সবাইকে সতর্ক করে সংঘঠিত হতে চলে যান ভারত। একত্রিত হন ১০ম ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের সাথে। অতপর ২নং সেক্টরে কমান্ডিং অফিসার ক্যাপ্টেন জাফর ইমামের নেতৃত্বে ফেনী জেলায় বিলোনিয়া যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহন করেন।বিলোনায়া মুক্ত করার পর মাধু মিয়া মুন্সিরহাট, রাণীর হাট, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যুদ্ধ করেন।
মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মাধু মিয়া মেজর জাফর ইমামের নেতৃত্বে পাক হানাদার বাহীনির বিরুদ্ধে ফেনীর পরশুরামের ১ নং মির্জনগর ইউনিয়নে যুদ্ধ আরম্ভ করেন। কাউতলি চম্পক নগরে মুহুরী নদীর উপর তাঁরা ডিফেন্স তৈরী করেন।

এরপর বিলোনিয়া রেলস্টেশন, দুগলাচান আর পরশুরাম ডাক বাংলো এবং বাজারের উপর বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে পাকবাহিনীর উপর গেরিলা হামলা চালান। তিনি এবং তার সহযোদ্ধারা মিলে ঐ হামলায় অনেক পাকিস্থানীকে হত্যা করেন এবং একজনকে জীবিত ধরে নিয়ে আসেন। সে সময় তার সহজ সরল বাবাকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করায় এবং দুই ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শুনে পাকবাহিনী ধরে নিয়ে যায়। একই এলাকার সাজু, ভেন্ডু মেম্বার সহ তাঁকে ফুলগাজী পুরাতন ব্রীজের উপর থেকে গুলি করে নদীতে ফেলে দেয়। বহু খুঁজেও মাধু মিয়ার শহিদ বাবার লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Instagram did not return a 200.
Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Your share and comment are an inspiration to us

X (Twitter)
Post on X
Pinterest
fb-share-icon
Instagram
FbMessenger
Copy link
URL has been copied successfully!