বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মূল পটভূমি হচ্ছে গ্রাম। আর এর প্রাণবন্ত ও প্রাকৃতিক রূপ আমাদের লোকজ ঐতিহ্যের মৌলিক বৈশিষ্ট্য। তাদের সরল মনের গ্রামীন কারুনৈপুন্য থেকে শুরু করে হস্তনির্মিত তাতঁ শিল্প, মৃৎশিল্প, কাসাঁ ও পিতল, বাশঁ ও বেত এবং পাট শিল্পের মত এক সুবিশাল ভান্ডারে সমৃদ্ধ আমাদের বাংলাদেশ। এই হস্ত ও কারুশিল্প মানচিত্র খুলনা বিভাগ -এর মাধ্যমে উপলদ্ধি করা যাবে খুলনা বিভাগের প্রতিটি জেলার প্রতিটি কোন কতটা বৈচিত্র্যময় এবং ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ । তাই এই মানচিত্র “সমৃদ্ধময় বাংলাদেশ” ।
খুলনা বিভাগ
অজানা রূপ-রহস্য আর রোমাঞ্চে ভরা বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, সুন্দরবন। বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলা জুড়ে এর বিস্তৃতি। সুন্দরবন, ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কোর ‘বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী’ স্থান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
সুন্দরবন শুধু খুলনা বিভাগের নয়, পুরো বাংলাদেশেকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার মত স্থান ।
লোকজ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যময় হস্ত ও কারুশিল্পের দিক দিয়েও খুলনা জেলা সমৃদ্ধ। লোকজ সংস্কৃতি এবং কারুশিল্পে অঞ্চল ভিত্তিক আলাদা আলাদা রূপ লক্ষ্য করা যায়। যেমন, শেলাবুনিয়ার নকশিকাঁথা, একটি গ্রামের একটি সেলাইকেন্দ্রকে ভর করে নকশিঁ কাথার নামকরন করা হয়েছে। আছে তালের পাখা, শোলার খেলনা, বাঁশ ও বেতের পাত্র, মাটির পাত্র, পুতুল ও খেলনা, মাদুর, কাঠের খেলনা ইত্যাদি। এছাড়া ‘সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী’ মরমী বাউল সাধক ফকির লালন সাঁইয়ের অনুসারীদের ব্যবহার্য বাদ্যযন্ত্র একতারার উপর কেন্দ্র করে ’একতারা শিল্প’ গড়ে উঠেছে।
খুলনা বিভাগের ঐতিহ্যময় হস্ত ও কারুশিল্প মানচিত্র
জেলারগুলোর ঐতিহ্যময় হস্ত ও কারুশিল্প মানচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে। তথ্য বিষয়ক ভুল থাকলে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। যে কোন ধরনের সংযোজন, বিয়োজন এবং সংযুক্ত করার জন্য আমরা প্রস্তুত। আপনার সহযোগিতায় আসতে পারে মানচিত্রের পূর্নতা।
ঐতিহ্যময় হস্ত ও কারুশিল্প পূর্ণাঙ্গ মানচিত্র দেখতে ক্লিক করুন
খুলনা বিভাগের উল্লেখযোগ্য হস্ত ও কারুশিল্প
শেলাবুনিয়ার নকশিকাঁথা >>>
নারিকেলের মালা >>>
শোলাশিল্প >>>
গামছা >>>
তালের পাখা >>>
একতারা শিল্প >>>
হস্ত ও কারুশিল্প মানচিত্র খুলনা বিভাগ
শেলাবুনিয়ার নকশিকাঁথা | NAKSHI KANTHA
দক্ষিণবঙ্গের সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাট জেলার মংলা উপজেলার শেলাবুনিয়া গ্রাম, যেখানে একটি সেলাইকেন্দ্রের নামে “শেলাবুনিয়ার নকশিকাঁথা” র নামকরন করা হয়েছে।
১৯৮২ সালে সেলাইকেন্দ্রটি গড়ে তুলেছেন ইতালিয়ান ফাদার মারিনো রিগন।
তিনি মংলার সেন্ট পলস গির্জার পুরোহিত। গির্জার আঙিনায় এই সেলাইকেন্দ্রে কাজ করছেন প্রায় শতাধিক নারী কর্মী, যাঁরা বেশির ভাগ অসহায়, দুস্থ, স্বামী পরিত্যক্তা কিংবা বিধবা।
এখানকার নকশিকাঁথায় ফুটিয়ে তোলা হয় আমাদের আবহমান সবুজ-শ্যামল গ্রামবাংলার ফুল, ফল, পাখি, কবিতা, পালকি, গ্রামের বধূ, কিষান-কিষানি কিংবা কাঁচা-পাকা ধানখেত, হাতি, ঘোড়া, বাঘসহ বিভিন্ন পশুপাখি, রাখাল-গরু, নদী, নদীর ঘাট, পালতোলা নৌকা, নৌকা পারাপার, গ্রামীণ নারীদের ধান ভানা, ধান শুকানো, আয়না দেখা, চুল বাঁধা, ঢেঁকি, ঢেঁকিতে পাড় দেওয়া, বধূসাজে পালকি, কনে দেখা, বিয়েতে হলদি বাটা, মেহেদি বাটা, বিয়ের কনে বরণ, দইওয়ালা, নাগরদোলা, বৈশাখী মেলা অথবা বাংলাদেশের রূপবৈচিত্র্য কিংবা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে।
নারিকেলের মালা | COCONUT SHELL
নারিকেলের উচ্ছিষ্ট মালা দিয়ে তৈরি হয় জিনিসপত্র।
নারিকেলের বাই প্রোডাক্টস অর্থ্যাৎ নারিকেলের মালার পুনর্ব্যবহার।
বাগেরহাটে পরিত্যক্ত নারিকেলের মালা দিয়ে বিভিন্ন দ্রব্যাদি তৈরি করে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বোতাম তৈরি করা যা দেশ-বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। নারিকেলের মালার বোতামের চাহিদা বাড়ায় বোতামের পাশাপাশি নারিকেলের মালা দিয়ে জুয়েলারি পণ্য সামগ্রী, যেমন- চুড়ি, কানের দুল, হার, কোমরের বিছা, হ্যান্ডব্যাগ, পার্টসব্যাগ, বোতাম, ওয়ালম্যাট, টেবিলসহ বিভিন্ন শোপিস তৈরি করছে।
শোলাশিল্প | SOHLA CRAFT
শোলা বা শোলা জাতীয় উদ্ভিদ থেকে এগুলি তৈরি হয়।শোলা একটি কান্ডসর্বস্ব গাছ। কান্ডের বাইরের আবরণটা মেটে রঙের, কিন্তু ভেতরটা সাদা। একটি শোলা গাছ বা তার কান্ড শিল্পীর হাতের স্পর্শে পায় ভিন্ন ভিন্ন রূপ।
শোলাশিল্প বাংলার অন্যতম লোকজ শিল্প।
ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলা শোলাশিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ। এখানে শোলা কেটে তাজমহল, পাখি, গরুর গাড়ি, ফুল, ময়ুরপঙ্খী নৌকা, বাজপাখি ও কুমির তৈরি করা হয়ে থাকে।
গামছা | GAMCHA
গামছা একটি পাতলা, অমসৃণ সূতির তোয়ালে যা গোসলের পর শরীর বা গা মুছতে ব্যবহৃত হয়।
খুলনা জেলার ফুলতলার গামছা সারাদেশেই পরিচিত। চান্দিনা হল গামছাপল্লীর বাজার ।
তালের পাখা | HAND FAN
শীত মৌসুমে তাল গাছের পাতা কেটে রোদে শুকিয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। পরে পানি থেকে উঠিয়ে নরম ভেজা পাতা গোলাকার করে কেটে মাঝখান থেকে দুখণ্ড করা হয়। তারপর শিল্পী নিজের মাধুরী মিশিয়ে অলংকরন করে থাকে। একটি তাল পাতা থেকে দুটি তালপাখা তৈরি হয়।
প্রাচীন লোকগাঁথাতে প্রবাদ আছে “আমার নাম তালের পাখা, শীতকালে দেইনা দেখা, গ্রীষ্মকালে প্রাণের সখা”। তাই তালের পাখাকে বলা হয় মানুষের প্রাণের সখা।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কোলা ও রায়গ্রাম ইউনিয়নের দুলালমুন্দিয়া গ্রামে তালপাখা তৈরি হয়।
একতারা শিল্প | EKTARA
‘সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী’ পণ্ডিত রামকানাই দাশের এ গানের মধ্য দিয়ে বাউল ভক্তরা তাদের সাধনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তারা সাঁইজি ও লালন অনুসারীদের ব্যবহার্য বাদ্যযন্ত্র একতারা’র মান ধরে রাখতে একতারা শিল্প গড়ে তুলেছে।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেউড়িয়ায় লালনের একতারা একটি সম্ভাবনাময় শিল্প।
খুলনা বিভাগের জেলা সমূহ
১০ টি জেলা নিয়ে খুলনা বিভাগ গঠিত
অন্যান্য ৮ বিভাগের
ঐতিহ্যময় হস্ত ও কারুশিল্প মানচিত্র
খানদানি জামদানি | TRADITIONAL ART OF WEAVING
ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্প
টানা-পোড়েনের তাঁত তত্ত্ব
খাদি পুরাণ
চুরি হওয়া কোনো শাড়ির নাম, টাঙ্গাইল শাড়ি
বাংলাদেশের জিআই পণ্যসমূহ – সমৃদ্ধময় বাংলাদেশ
নকশি কাঁথা: বাংলাদেশের লোকশিল্পের একটা অংশ
জামদানি | মসলিন কাপড়ের উত্তরাধিকারী
লুঙ্গি কথন | LUNGI CONVERSE
শীতল পাটি | SHITAL PATI
টাঙ্গাইল তাঁতের শাড়ি | TANGAIL SAREE
বাংলাদেশি সেরা দশ শাড়ি
Graphic: FXYZ
powered by Bangladesh Fashion Archive | BFA
image and information Source: internet