বাংলাদেশে পোশাক শিল্পের যাত্রা ষাটের দশক থেকেই শুরু হলেও সত্তরের দশকের শেষ দিকে এটি রপ্তানি খাত হিসেবে বিকশিত হতে থাকে। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ শুধুমাত্র পোশাক শিল্প থেকেই রপ্তানি করেছে ৪২.৬১৩ বিলিয়ন ডলার, যা দেশের মোট রপ্তানির ৮১.৮১ শতাংশ। বর্তমানে পোশাক শিল্প বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানিমুখী শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই শিল্প দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান উৎস হিসেবে অবদান রেখে চলেছে।
একইসঙ্গে, দেশে স্থানীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর বিকাশ ঘটতে শুরু করেছে। দেশীয় নকশা ও সৃজনশীলতার সাথে মিলিয়ে তৈরি করা পোশাকগুলো ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করছে। স্থানীয় ফ্যাশন শিল্প নিজস্ব ধারায় ফ্যাশনেবল হয়ে ওঠার পথ তৈরি করেছে, যা দেশের ফ্যাশন জগতের একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্থানীয় ফ্যাশন শিল্পের পরিধি ধীরে ধীরে বাড়ছে। বিশাল জনসংখ্যা, প্রায় ১৬ কোটি মানুষের বাজারকে লক্ষ্য রেখে নতুন নতুন দেশীয় ব্র্যান্ড গড়ে উঠছে। এসব ব্র্যান্ডের সংখ্যা প্রতিশ্রুতিশীল হারে বাড়ছে, যা দেশীয় ফ্যাশন শিল্পকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলছে। ধারাবাহিকতায় এবার “ SADAKALO | সাদাকালো “ . . .
ফ্যাশন শিল্পে দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোর উত্থান একদিকে যেমন দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে, অন্যদিকে বাংলাদেশি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠছে।
SADAKALO
বাংলাদেশের বুটিক শিল্পের শুরুর দিকে একটি সাধারণ ধারণা ছিল—ফ্যাশন মানেই উচ্চবিত্তদের ব্যাপার এবং এটি মহিলাদের জন্যই প্রযোজ্য। ফ্যাশন বলতে অনেকেই শুধুমাত্র কোনো উৎসবকেন্দ্রিক কেনাকাটার কথা বুঝতেন, যেখানে রঙিন পোশাকে সবাই উৎসবে মেতে ওঠে। এমন স্টেরিওটাইপ ভাঙা তখন সাহসিকতার পরিচয় ছিল। তবে এই সাহসিকতার পরিচয় ২১ বছর আগে দেখিয়েছিলেন সাদাকালো ব্র্যান্ডের উদ্যোক্তা তাহসিনা শাহীন, যখন তিনি মনোক্রমিক অর্থাৎ শুধুমাত্র সাদা ও কালো রঙের উপর ভিত্তি করে একটি ফ্যাশন হাউজ প্রতিষ্ঠা করেন।
এটা ঠিক যে, এমন কেউ নেই যার ওয়ারড্রবে অন্তত একটি সাদা বা কালো রঙের পোশাক নেই। সাদা ও কালো দুটি রঙ সর্বজনীন, সবার ওয়ারড্রবে পাওয়া যায়। তবে ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে শুধুমাত্র এই দুটি রঙের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে একটি ফ্যাশন স্টেটমেন্ট তৈরি করা সহজ কাজ নয়। সাদাকালো দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রমাণ করেছে যে, শুধুমাত্র এই দুটি রঙ ব্যবহার করেও নান্দনিক ফ্যাশন তৈরি করা সম্ভব।
যদিও সাদাকালো দুটি রঙের উপর ভিত্তি করে কাজ করে, তবু সাদা ও কালোর বিভিন্ন শেড রয়েছে যা এই ব্র্যান্ডকে বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে। তাদের এই নকশায় সাদা ও কালোর বিভিন্ন শেডের ব্যবহার ফ্যাশন জগতে একটি বিশেষ স্থান দখল করেছে।
বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি ও উৎসবগুলো অনেকটা রঙের প্রভাবের ওপর নির্ভর করে চলে। যেমন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে (২১শে ফেব্রুয়ারি) সাদা, কালো এবং লালের প্রাধান্য দেখা যায়, বৈশাখে লাল-সাদার সঙ্গে অন্যান্য উজ্জ্বল রং যুক্ত হয়, আর দুর্গাপূজায় লাল-সাদা এবং গোল্ডেন রঙের পোশাকের চাহিদা থাকে। ঠিক তেমনি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সাদা-কালো পোশাক মানেই যেন সাদাকালো ব্র্যান্ডের পোশাক। এই উৎসবকেন্দ্রিক রঙের ব্যবহার এবং সাদা-কালো রঙের প্রতি মানুষের সহজাত ভালোবাসা সাদাকালোর ব্র্যান্ডিংকে অনেকটা এগিয়ে নিয়েছে।
সাদাকালো শুধু দুটি রঙের মাধ্যমে একটি স্থায়ী ফ্যাশন স্টেটমেন্ট গড়ে তুলেছে, যা বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে একটি অভিনব উদ্যোগ হিসেবে স্বীকৃত।
story of SadaKalo
সাদাকালোর শুরু গল্প
সাদাকালো ব্র্যান্ডের শুরুর গল্পটি তার প্রতিষ্ঠাতা ও ডিজাইনার তাহসিনা শাহীনের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও সৃজনশীলতার ফসল। তাহসিনা শাহীন ছোটবেলা থেকেই সাদা ও কালো রঙের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ অনুভব করতেন। তিনি চারুকলায় পড়াশোনা করার সময় একদিন তার বড় বোন ছবি আঁকা ও আঁকির জন্য তাকে বেশ কিছু স্টেশনারি উপকরণ উপহার দেন। মজার ব্যাপার হলো, সেই উপকরণগুলো সবই সাদা ও কালো রঙের ছিল। উপকরণগুলো একসঙ্গে দেখে তাহসিনার মনে হলো, একটি দোকান কেমন হবে যেখানে সব পণ্যই সাদা ও কালো রঙের থাকবে। এখান থেকেই তার মাথায় আসে একটি ব্র্যান্ড তৈরির ধারণা—একটি শপ, যেখানে শুধুমাত্র সাদা ও কালো রঙে সাজানো পণ্য থাকবে।
এই ভাবনা থেকেই ২০০২ সালের ৪ অক্টোবর ঢাকার রাইফেলস স্কয়ার (বর্তমান সীমান্ত স্কয়ার) এ সাদাকালো’র প্রথম আউটলেট চালু হয়। সাদা ও কালো—দুটি মাত্র রঙ ব্যবহার করে সাদাকালো ফ্যাশনপ্রেমীদের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তাহসিনা শাহীন বিশ্বাস করেন, সাদা ও কালো রঙের প্রতি মানুষের সহজাত ভালোবাসা আছে। কারো হয়তো বেগুনি বা হলুদ রঙ পছন্দ না-ও হতে পারে, কিন্তু সাদা বা কালো রঙের পোশাক প্রায় সবার কাছেই থাকে।
প্রথম আউটলেটের সাফল্যের পর, এক বছরের মধ্যেই বনানীতে সাদাকালো’র দ্বিতীয় শাখা খোলা হয়। এরপরে বেইলি রোডে তৃতীয় শাখা এবং ২০০৬ সালের নভেম্বরে গুলশান এভিনিউতে “ডিজাইনার্স কর্নার”-এ যুক্ত হয় সাদাকালো। এভাবে সাদাকালো ধীরে ধীরে প্রসারিত হয়ে ১১টি বিক্রয় শাখা নিয়ে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে তাদের পথচলা অব্যাহত রেখেছে, এবং বাংলাদেশের ফ্যাশন দুনিয়ায় একটি উল্লেখযোগ্য নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তাহসিনা শাহীন | TAHSINA SHAHIN
তাহসিনা শাহীনের জন্ম মাগুরা জেলায়। চার বোনের মধ্যে তাহসিনা শাহীন সবার ছোট। লেখাপড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে। ফাইনাল পরীক্ষার পরদিন থেকেই একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায ‘এশিয়াটিক সোসাইটি’ তে কাজ শুরু করেন। পাঁচ বছর চাকরি করেছেন। চাকরিরত অবস্থায়ই চালু করেন সাদাকালো। সময়টা ২০০২ সাল। সাদাকালো কিংবা ডিজানার ব্যাপারটা হুটকরেই এসছে তা নয়। সেভেন-এইটে পড়ার সময় থেকেই তিনি বোনদের জন্য ঈদের জামা বানাতেন। কাপড়ে ডিজাইন করতেন, এমনকি নিজেই সেলাই করতেন।
কোনো ভাই ছিল না পরিবারে। ছেলেবেলা থেকে মায়ের শিক্ষা, শুধুই বিয়ের জন্য মেয়েদের জন্ম নয়, কিছু একটা করতেই হবে। তাই শাহীন বলেন, ছেলেবেলা থেকেই জানতাম, কিছু একটা করব, নিজের এই বিশ্বাস আমার সবসময়েই ছিলো৷ সেই বিশ্বাস থেকেই শিল্পসত্তাময় এক নারীর স্বপ্নের বাস্তবতা হলো আজকের সাদাকালো । নারী জাগরণ ও ক্ষমতায়নে তাহসিনা শাহীনের রয়েছে বিশেষ ভূমিকা।
আপনার একটি শেয়ার আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা
SADAKALO Official Logo
সাদাকালো
ESTABLISHED: 4 October 2002
FOUNDER: Tahsina Shahin
CONTACT INFO
Email Address: sadakalo.headoffice@gmail.com
Official Facebook Page: Sadakalo
Contact No: 01714-169777
sadakalo Websites: www.sadakalo.net
SADAKALO Sub Brand
Beyond Sadakalo
২০১৮ সালে সাদাকালো প্রথমবারের মতো তাদের নিজস্ব রঙের বাইরে অন্য রঙ নিয়ে কাজ করে নতুন মাত্রায় নতুন পোশাকের লাইনআপ তৈরি করে। যার নাম দেওয়া হয় বিয়ন্ড সাদাকালো। এই লাইনআপ মুলত ইয়থদের কথা মাথায় রেখেই শুরু করা।
সাদাকালো | দুই দশকের পথ চলা
”তুমি আর আমি এক চিমটি” – ২০০৪
শিশুদের জন্য ”তুমি আর আমি এক চিমটি “ থিমের অধীনে মডেল ছিলেন যাদুকর জুয়েল আইচ, অভিনেত্রী শম্পা রেজা, গায়ক জুয়েল এবং অভিনেত্রী তমালিকা
”আমি তোমার সঙ্গে বেধেছি আমার প্রাণ” – ২০০৫
দম্পতিদের বা কাপলদের জন্য ”আমি তোমার সঙ্গে বেধেছি আমার প্রাণ” থিমটি দিয়ে ফ্যাশনে নতুন এক স্টেটমেন্ট নিয়ে আসলেন। পোশাক হবে প্রিয় মানুষের সাথে মিল রেখে। বেশ সাড়াজাগানো থিম। ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর ছিলেন দম্পতি আলী যাকের এবং সারা জাকের।
ঢাকা ফ্যাশন উইক – ২০১০ এ সাদাকালো অংশগ্রহন করে।
সাদাকালোর সফল অধ্যায়
৭ এপ্রিল, ২০২২ এ দেশীদশ তাঁদের ঈদ অয়োজন নিয়ে ঢাকা ক্লাবে আয়োজন করেছিল ঈদ ফ্যাশন শো । ফ্যাশন শো-তে সাদাকালো অংশগ্রহন করে।
৪ এপ্রিল , ২০১৭ তে ফ্যাশন এন্টারপ্রেনারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এফইএবি) ফ্যাশন ফেস্টিভালে সাদাকালো বৈশাখী ফ্যাশন শো ২০১৭ আয়োজিত হয়।
৫ জুন, ২০১৬ ” দেশের পণ্য সবার জন্যে’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ঈদ উপলক্ষ্যে দেশি দশের ফ্যাশন শো তে সাদাকালো অংশগ্রহন করে।
৯ এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা প্লাজাতে ফ্যাশন এন্টারপ্রেনারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো আয়োজন করে ‘বৈশাখী ফ্যাশন শো ১৪২৩। আর এতে অংশগ্রহন করে সাদাকালো।
২ মে ২০১৪ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ধানমণ্ডির আঁলিয়স ফ্রঁসেজের উঠানে “সাদাকালো” এর উদ্দ্যগে অনুষ্ঠিত হয় গর্ভকালীন পোশাকের ফ্যাশন শো।
ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন লুক এ্যাট মিসের উদ্যোগে বৈশাখবরণ আয়োজন “আরটিভি লুক এ্যাট মি বৈশাখী ফ্যাশন উৎসব ১৪১৯” এ সাদাকালো অংশগ্রহন করে।
সাদাকালোর পন্য
শাড়ি, পাঞ্জাবী, কামিজ সেট, সিঙ্গেল কামিজ, ফতুয়া, টি-শার্ট, জুয়েলারী, মগ, আনস্টিচ ব্লাউজ, শাল, স্কাট, ওড়না, কটি, জ্যাকেট এবং বই।
Sadakalo SHOWROOM Address
Bangladesh
Bashundhara City Deshidosh Outlet
Level 07, Block A, Deshidosh, Bashundhara City Shopping Mall,
Panthapath, Dhaka Phone: 02 48110371
.
Dhanmondi Outlet
Shop No. 349, 3rd Floor, Shimanto Square,
Road 02, Dhanmondi, Dhaka Phone: 02 9650877
.
Bailey Road Outlet Baily Fiesta
Baily Road, Dhaka Phone: 01714-169802
.
Chattogram Outlet
Deshidosh, Afmi Plaza, 1/A Bayzid Bostami Road,
Chattogram Phone: 031-2556865
.
Sylhet Outlet
Deshidosh, Bir Bikram Yemen Complex, A/36 Kumarpara Rd,
Sylhet Phone: 01714-169772
.
Khulna Outlet
Majid Sharani,Shibbari,
khulna Phone: 01975-366388
আরও পড়ুন