LOKKHON SAHAR JOMIDAR BARI
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া,
একটি ধানের শিষের উপর
একটি শিশির বিন্দু।
রবীন্দ্রনাথের এই কবিতার সাথে আমার এই বাড়ি দেখা মিলে যায় হুবহু। বলছি জমিদার লক্ষ্মণ সাহার বাড়ি কথা, যা নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার ডাংগা নামক এলাকায় অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। যা স্থানীয়দের কাছে উকিল বাড়ি নামে বেশ পরিচিত। ইতিহাস থেকে যতটুকু জানা যায়, এটা ছিল জমিদার লক্ষ্মণ সাহার বাড়ি। তিনি এই অঞ্চলের প্রধান জমিদার ছিলেন না। মূলত তিনি ছিলেন প্রধান জমিদারের অধিনস্থ সাব-জমিদার। এই জমিদার বংশধররা অন্য জমিদারের আওতাভুক্ত ছোট জমিদার ছিলেন। তবে তাদের কখনো ব্রিটিশ সরকারকে খাজনা দিতে হয়নি। কারণ এই জমিদারী এলাকাটি ভারত উপমহাদেশের মধ্যে একমাত্র এলাকা ওয়াকফ হিসেবে ছিল।
জমিদার লক্ষ্মণ সাহার ছিল তিন ছেলে।নিকুঞ্জ সাহা,পেরিমোহন সাহা ও বঙ্কু সাহা। বঙ্কু সাহা ভারত ভাগের সময় এখান থেকে ভারতে চলে যান। থেকে যায় দুই ভাই। পাকিস্থান থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হওয়ার কিছু পূর্বে নিকুঞ্জ সাহাও ভারতে চলে য়ায়। তখন থেকে যায় পেরিমোহন সাহা। এই পেরিমোহন সাহার ছিল এক ছেলে।তার নাম ছিলো বৌদ্ধ নারায়ন সাহা। বৌদ্ধ নারায়ন সাহার কাছ থেকে বাড়িটি ক্রয় করেন আহম্মদ আলী (উকিল)। মূলত আহম্মদ আলী সাহেব উকালতি পেশার সাথে সংযুক্ত ছিলেন বিধায় বর্তমানে এই জমিদার বাড়িটি উকিলের বাড়ি হিসেবেই বেশি পরিচিত।
লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়িটি দ্বিতল বিশিষ্ট্য কারুকার্য খচিত একটি ভবন। বাড়ির কারুকাজ ও রঙের ব্যবহার ছিল স্থানীয় শিল্পভাবনার সাথে ইউরোপীয় নকশার প্রভাব। বিশাল বারান্দা এবং মেঝেতে লাল রঙের ঢালাই। কোথাও কোথাও সাদা কালো মাবের্ল পাথর । প্রতিটি জানালা এবং দরজা কাঠের খিলান। চারদিকে উচু প্রাচির দ্বারা বেষ্টিত। জমিদার বাড়ির পিছনে উঠানের মত পাকা করা উচু ডিবি। যদিও এখন গাছগাছালি যুক্ত বাগান হয়ে আছে। রয়েছে একটা পুকুর এবং সাঁন বাঁধানো পুকুর ঘাট। পুকুর ঘাটে ঢোকার সময় দেখা মিলবে মুল্যবান সিরামিকস এর ঢালাই। পূজো করার জন্য পুকুরের চারপাশে তিনটি মঠ বা মন্দির ছিল। যা নষ্ট হয়ে গেছে। একটা অবশিষ্ট আছে, যা মূল ভবনের মত কারুকার্য খচিত। পুকুড় পাড়ে সহজেই দেখা মিলবে।
আপনার একটি শেয়ার আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা


















আমাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম লিংক
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে