শিল্পী ইমদাদ হোসেন এর জন্ম ১৯২৬ সালের ২১শে নভেম্বর চাঁদপুরে। তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে ঢাকার কেরানীগঞ্জে রোহিতপুরের পৈতৃক বাড়িতে। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা আর্ট স্কুলে প্রথম ব্যাচে ভর্তি হন। চারুকলা থেকে পাশ করেন ১৯৫৪ সালে।
শিল্পী ইমদাদ হোসেন | IMDAD HOSSAIN
কর্মজীবন
শিল্পী ইমদাদ হোসেন কাজ করেছেন বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিসিক ডিজাইন সেন্টারসহ অনেক প্রতিষ্ঠানে। বিটিভির বর্তমান লোগোটি তাঁরই করা। তিনি ভূমিকা রেখেছিলেন আন্দোলন, উনসত্তুরের গণআন্দোলন এবং আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে। ভাষার অধিকার নিয়ে শুধু সরাসরি লড়াইয়েই নয়, ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিস্মারক শহীদ মিনারের নকশায় মূলস্তম্ভের পেছনে লাল সূর্যটি এসেছিলো শিল্পী ইমদাদ হোসেনের প্রস্তাবেই। ছবি আঁকার চাইতে তিনি বেশি সময় দিয়েছিলেন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে।
পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়, সে নামটি চারুকলা অনুষদের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমদাদ হোসেন এর দেওয়া।
সম্মাননা
ইমদাদ হোসেন চারুশিল্পে বিশেষ অবদান রাখায় ২০১০ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। এ ছাড়া তিনি বাংলা একাডেমীর ফেলো, দৈনিক জনকণ্ঠ আজীবন সম্মাননা, চারুশিল্পী সংসদের সম্মাননাসহ বিভিন্ন পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন।
মৃত্যু
ইমদাদ হোসেন ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর মুত্যুবরণ করেন । তিনি বার্ধক্যজনিত অসুখ, ডায়াবেটিস ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
ফটো জার্নালিস্ট মোহাম্মদ আসাদ এর ডায়েরি থেকে
১৯৯৯ সালে মে মাসের ২৪ তারিখে পুরানা পল্টনস্থ কালার স্ক্যান লিমিটেডে গিয়ে প্রথম দেখা করি এই শিল্পীর সঙ্গে। তখন তিনি এই প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা। অনেক গল্প হল। জানালেন, হাত কাঁপে বলে এখন ছবি আঁকা হয়ে ওঠে না। তারপরও আমি একটু ড্রইং করে দেয়ার অনুরোধ করলাম। তিনি আমার অনুরোধ রাখলেন। দুইটি ড্রইং করলেন। স্বাক্ষর করলেন একটিতে।
তারপর ছোট কাগজ ‘ঢাকা ত্রৈমাসিক’-এর স্মৃতি সংখ্যার জন্য লেখা আনতে গিয়েছিলাম আরেক বার। তাঁর সন্তানরা সবাই কীত্তিমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চারুকলা অনুষদের পরিচালক, শিল্পী নিসার হোসেন, ইমদাদ হোসেনের সুযোগ্য সন্তান।

শ্রদ্ধাঞ্জলি

facebook থেকে নেয়া :
মন্তব্য করেন |
নমস্য ব্যক্তি। কী অসাধারণ মানুষ। একটি স্মৃতির কথা মনে পড়লে আজো শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে যায়। তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।
আপোষহীন সাহসি শিল্পী ইমদাদ ভাই ছিলেন শিল্পীদের আশ্রয়স্হল।উনি যেখানেই চাকুরী করেছেন সেখানেই মনে হত এটি আমার জায়গা।মতিঝিলে বিসিক এ যেতাম ওনার টানে।এখন বিসিকের সেই জৌলুস আর নেই।
ইমদাদ ভাই আমার খুব কাছের একজন শ্রদ্ধার মানুষ ছিলেন। তাঁকে ভুলতে পারিনা। কতো কাজে নির্মোহ এই মানুষটির স্নেহ পেয়েছি, তার হিসেব নেই। শ্রদ্ধা প্রিয় ইমদাদ ভাই।