different types of jamdnai জামদানি শাড়ি বিভিন্ন ধরণ x bfa x fxyz

জামদানি শাড়ি বিভিন্ন ধরণ

কাউন্ট দিয়ে সুতার মান বোঝানো হয়ে থাকে । যে সুতার কাউন্ট যত বেশি, সেই সুতা তত চিকন হয়ে থাকে ।জামদানি শাড়ির সুতার কাউন্ট সাধারনত ৩২ থেকে ২৫০ কাউন্টের হয়ে থাকে । 

জামদানি শাড়ি  বিভিন্ন ধরণ

Different Types of Jamdani

জামদানি—শব্দটির উচ্চারণেই যেন নকশার নিখুঁত কারুকাজ, অতীতের ঐতিহ্য আর শিল্পীর নিঃশব্দ নিবেদন ধ্বনিত হয়। বাংলাদেশের গর্ব এই জামদানি শুধু একটি শাড়ি নয়, এটি এক বিস্ময়কর শিল্পচর্চা, যা যুগের পর যুগ ধরে বয়ে এনেছে বাঙালি সংস্কৃতির সূক্ষ্মতা ও সৌন্দর্যবোধ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জামদানির নকশা, গঠন ও বুননের উপকরণে এসেছে বৈচিত্র্য, তৈরি হয়েছে নানা ধরণের জামদানি—কটন, হাফ সিল্ক এবং সিল্ক। প্রতিটি ধরণের রয়েছে নিজস্ব আলাদা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্য। এদের মাঝে সূক্ষতা নির্ধারিত হয় সুতার কাউন্টের উপর, যেখানে যত বেশি কাউন্ট, তত বেশি মিহি ও উন্নতমানের শাড়ি। তবে মেশিন বোনা জামদানিতে সেই সূক্ষতা অনুপস্থিত থাকে, যা মূল জামদানির নরমতা ও নিপুণ কারুকার্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে না। এই প্রবন্ধে আমরা জানবো জামদানি শাড়ির এই তিনটি প্রধান ধরণ ও তাদের কাউন্টভেদে মানের পার্থক্য নিয়ে বিস্তারিত তথ্য।

Different Types of Jamdani

জামদানি শাড়ি  বিভিন্ন ধরণ 


.
সিল্ক জামদানি, হাফ সিল্ক জামদানি এবং কটন জামদানি — এই তিনটি ধরণের জামদানি শাড়ির উপর বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হলো:

সিল্ক জামদানি

সিল্ক জামদানি মূলত বিলাসিতা এবং আভিজাত্যের প্রতীক। এই শাড়িগুলোতে বুননের জন্য ব্যবহৃত হয় খাঁটি রেশম সুতা, যা দেখতে যেমন ঝকঝকে, তেমনি মসৃণ। সিল্ক জামদানির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর উজ্জ্বলতা ও ভারী নকশা। অথ্যাত সিল্ক জামদানি শাড়ির টানার সুতা, ভরনার  সুতা এবং শাড়ির উপরের নকশা সবই রেশম / সিল্ক  হয়ে থাকে। সিল্ক জামদানি সাধারণত তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি হয় কারণ রেশম সুতা ব্যয়বহুল এবং এর সুক্ষ বুননে সময় ও শ্রম বেশি লাগে।


হাফ সিল্ক জামদানি

হাফ সিল্ক জামদানি হলো এমন একটি শাড়ি, যেখানে সিল্ক এবং কটন—এই দুই উপকরণের সংমিশ্রণ ঘটে। এটি দেখতে অনেকটা সিল্ক জামদানির মতো হলেও তুলনামূলকভাবে হালকা এবং বেশি আরামদায়ক। মূলত শাড়ির টানার সুতা রেশমের হয়ে থাকে এবং ভরনার  সুতা কটন এর হয়ে থাকে। বেশিরভাগ সময়ে কটন সুতা দিয়ে  নকশা তোলা হয়।


কটন জামদানি

এই ধরণের জামদানি শাড়িগুলোই আদিকালের আসল জামদানির উত্তরসূরি। কটন জামদানি একদিকে যেমন ঐতিহ্যবাহী, তেমনি গরম আবহাওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযোগী। এর সূক্ষ্মতা নির্ভর করে সুতার কাউন্টের উপর। উচ্চ কাউন্টের জামদানি যেমন হয় হালকা, মোলায়েম ও দারুণ আরামদায়ক, তেমনি নিম্ন কাউন্টের কাপড় হয় মোটা ও তুলনামূলকভাবে রুক্ষ। অথ্যাত
 ফুল কটন শাড়িতে টানার সুতা, ভরনার  সুতা, নকশা সবই কটনের হয়ে থাকে। এই সুতি সুতাটা তৈরি হয় কার্পাস তুলা থেকে।

কাউন্ট এবং মান

কাউন্ট দিয়ে সুতার মান বোঝানো হয়ে থাকে । যে সুতার কাউন্ট যত বেশি, সেই সুতা তত চিকন হয়ে থাকে।

হাতে বোনা জামদানি: ৮০–২৫০ কাউন্ট পর্যন্ত হয়। এতে সুতা অনেক চিকন ও মসৃণ হয়। ফলে কাজও সূক্ষ ও ঝরঝরে হয়।

বাজারে আরো এক ধরণের জামদানী পাওয়া যায়, এগুলো কে বলা হয় নাইলন জামদানী। নাইলনের জামদানিতে নাইলন টানার সাথে ভরনা  আর নকশা, নাইলন বা কটন দুটাই হতে পারে।
নাইলন আর রেশমে দেখতে খুব বেশি পার্থক্য বুঝা যায় না। খুব পাকা জামদানি ব্যাবসায়ী না হলে ধরা সম্ভব না যে  কোনটা রেশমের জামদানি আর কোনটা নাইলনের জামদানি।

মেশিন বোনা জামদানি: সাধারণত ২৪–৪০ কাউন্ট। এতে সূক্ষ্মতা কম থাকে, কাপড় মোটা হয়, আর নকশাগুলোও তুলনামূলকভাবে কম স্পষ্ট ও প্রাণহীন।



তথ্যসূত্র
prothomalo.com/ঢাকাই-জামদানির-রঙিন-ভুবন
bbc.com/bengali
bn.wikipedia.org
চিত্রসূত্র : বিপুল হোসেন
গ্রাফিক্স : ফায়জী হাসান


স্বীকৃতি


২০১৩ সালে জামদানী বয়নের অতুলনীয় পদ্ধতি ইউনেস্কো কর্তৃক একটি অনন্যসাধারণ নির্বস্তুক সংস্কৃতিক ঐতিহ্য (ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেইজ) হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে ।

ঐতিহ্যবাহী নকশা ও বুননের কারণে ২০১৬ সালে জামদানিকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো।

জামদানি শাড়ি গ্যালারি

PICTURE OF JAMDANI SAREE



জামদানি সম্পর্কে বিস্তারিত

আলাদা আলাদা করে বর্ণনা দেয়া আছে। বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন লিংকে –

JAMDANI | SOURCE OF THE DESIGN

কারও কারও মতে, জামদানির নকশায় ইরান, ইরাক ও তুর্কি কার্পেট ও লৌকিক নকশার ছাপ রয়েছে। কারও কারও মতে, জামদানির নকশা একান্তভাবে বাংলার তাঁতিদের সৃজনশীলতা পরিচায়ক।

জামদানি বুনন এর কৌশল ও প্রক্রিয়া

জামদানি বুনন এর কৌশল ও প্রক্রিয়া

ওস্তাদ ভরনার সুতা মাকুর সাহায্যে সাগরেদ এর দিকে চালান দেয় এরপর ‘দোপ্তি ’ টেনে কান্ডুর দয়ে  নিখুঁত ভাবে ঘুরিয়ে জামদানির মুল নকশা তোলা হয় ।

tools of jamdani weaving

জামদানি তৈরিতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম

‘জামদানি’ হচ্ছে বিশেষ ভূগোল ও পরিবেশে শিল্প চর্চার বিশেষ একটি ধরণ যার মাধ্যমে একজন তাঁতি  সুতা , রং , মাকু , কান্ডুর এবং তাঁত এর মাধ্যমে নৈপুণ্য শিল্প তৈরী করে ।

জামদানি তৈরির বিভিন্ন স্তর

জামদানি তৈরির বিভিন্ন স্তর

‘এই শিল্প উৎপাদনের সাথে শুধু তাঁতিই নয়, জামদানি তৈরির প্রতিটি স্তরে যুক্ত আছে বিভিন্ন ঘরাণার মানুষ।

জামদানি শাড়ি বিভিন্ন ধরণ

জামদানি শাড়ি বিভিন্ন ধরণ

কাউন্ট দিয়ে সুতার মান বোঝানো হয়ে থাকে । যে সুতার কাউন্ট যত বেশি, সেই সুতা তত চিকন হয়ে থাকে ।জামদানি শাড়ির সুতার কাউন্ট সাধারনত ৩২ থেকে ২৫০ কাউন্টের হয়ে থাকে । 

how to recognize jamdani

আসল জামদানি শাড়ি চেনার উপায়

জামদানি বুননে মুলত  প্রতিটি নকশার  সুতা  ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নকশা তোলা হয় । যার ফলে  সুতার কোন অংশ বের হয়ে থাকে না। এ কারণে জামদানি নকশায় দুই দিকেই ফুটে উঠে ।

jamdani tate bosar dua

তাঁতে বসার দোয়া

এ কালের শ্রেষ্ঠ জামদানি ওস্তাদ হিসাবে স্বীকৃত হাজি কফিল উদ্দিন ভূঁইয়া ভাষ্যমতে, বালক বয়সে তাঁতে বসার আগে তিনি যে দোয়াটি পাঠ করতেন, তা হিন্দু দেবতা বিশ্বকর্মার উদ্দেশ্যে , দেবতা হিসাবে নয় বরং গুরু ধার্যে ।

জামদানি শাড়ি কাটা করা

জামদানি বানানোর সময় তাঁতিরা সুতাতে মাড় ব্যবহার করে। শাড়ি কয়েকবার পরার পর সেই মাড় গুলো নষ্ট হয়ে যায় বলে শাড়িটা নরম হয়ে যায়।

jamdani markteplace

জামদানি হাট

তাতিঁরা হাত উচিয়ে যখন  শাড়ি  ধরেন তখনই জানান দেয় জামদানি শাড়ির অবস্থান কতটা উঁচুতে।  

jamdani motif preservation

জামদানি নকশা সংরক্ষণ

ঐতিহ্যবাহী নকশা ও বুননের কারণে ২০১৬ সালে জামদানিকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Instagram did not return a 200.
Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Your share and comment are an inspiration to us

X (Twitter)
Post on X
Pinterest
fb-share-icon
Instagram
FbMessenger
Copy link
URL has been copied successfully!